আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরে শার্শায় ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক সুজায়েতুজ্জামান প্রিন্স হত্যার ২১ বছর পর ‘উদ্ভাবক’ মিজানুর রহমান মিজানসহ চারজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার(২৪ জুলাই) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক জয়ন্তী রানী দাস এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক।
সাজাপ্রাপ্ত মিজানুর রহমান মিজান শার্শা উপজেলার আমতলা গাতিপাড়া গ্রামের আক্কাস আলী মোড়লের ছেলে ও নিহত প্রিন্সের আপন দুলাভাই। অপর আসামিরা হলেন, যশোরের বেনাপোল কাগজপুকুর গ্রামের কালু ওরফে ঘাড়কাটা কালুর ছেলে সেকেন্দার, একই গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে জসিম ও ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটাডাঙা গ্রামের গোলাম মণ্ডলের ছেলে ইকবাল হোসেন।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, প্রিন্স ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ২০০৪ সালের ২০ আগস্ট প্রিন্স তার গ্রামের বাড়ি পোড়াবাড়ি নারায়ণপুর থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে ভাড়ায় চালানোর উদ্দেশ্যে বের হন। এরপর তিনি আর বাড়ি ফিরে আসেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি পর প্রিন্সকে উদ্ধারে ব্যর্থ হন স্বজনরা। পরদিন সকালে ছোট নিজামপুর গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে প্রিন্সের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় নিহত প্রিন্সের মামা বকতিয়ার অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে বেনাপোল পোর্ট থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্তকালে আটক আসামিদের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, প্রিন্সের মোটরসাইকেলটি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে মোটরসাইকেল ছিনতাই করতে প্রিন্সকে হত্যা করেছিল আসামিরা। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ওই চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আফজাল হোসেন।
সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২১ বছর পর এক রায়ে ওই চারজনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত মিজান ও সেকেন্দার বর্তমানে কারাগারে আছে।