শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন এবং ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, "১১ জুলাই সেই দিন, যেদিন আমাদের শান্তিপূর্ণ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছিল পতিত স্বৈরাচার সরকার। সহিংসতার সূচনা হয়েছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাই ১১ জুলাইকে আমি 'প্রথম প্রতিরোধ দিবস' ঘোষণা করছি।"
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৩টায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার প্রথম প্রতিরোধ ১১ জুলাই” শীর্ষক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা আসিফ বলেন, "গত বছরের ১১ জুলাই ঢাকায় আন্দোলন চলাকালে আমরা শুনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। তাদের সাহস সারা দেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রেরণা দিয়েছিল। আবু সাঈদের মতো সাহসীরা রক্ত দিয়ে আন্দোলনকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রূপান্তর করেছেন।"
তিনি ঘোষণা দেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির স্থানে একটি প্রতিরোধ মিনার নির্মাণ করা হবে এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে তিনটি বাস উপহার দেওয়া হবে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমরা ব্যক্তি পূজার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশপন্থী নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম ও সরকার চাই। এজন্য ৩ আগস্টের জুলাই সনদ দাবির আন্দোলনে সকলকে অংশ নিতে আহ্বান জানাই।”
স্মরণ সভার শুরুতে তিনি 'জুলাই মিনার' নামে একটি স্মারক ফলক উন্মোচন করেন এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রদর্শিত হয় জুলাই আন্দোলনের উপর একটি প্রামাণ্য চিত্র।
শিক্ষার্থীরা স্মরণ সভায় বলেন, ১১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর প্রথম হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু জুলাই ক্যালেন্ডারে কুমিল্লার নাম নেই, যা শিক্ষার্থীদের ক্ষুব্ধ করেছে। তারা ১১ জুলাইকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান এবং হুঁশিয়ারি দেন, দাবি না মানলে আবারো মহাসড়ক অবরোধ করবেন।
তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে: শহীদ আবদুল কাইয়ুমের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্মৃতিস্তম্ভ, বাস সংকট নিরসনে নতুন বাস, এবং হামলার স্থানকে 'ছাত্র আন্দোলন চত্বর' হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান।
স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম। তারা সকলেই ১১ জুলাইকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। সভায় আন্দোলনে আহতদের সম্মাননা জানানো হয় এবং সহস্রাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।