আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর): সরকার পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে বন্ধ রয়েছে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরের মধ্যে ভারত-বাংলাদেশের নিয়মিত মাসিক বাণিজ্যিক বৈঠক। এর ফলে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে উদ্ভূত সমস্যাগুলোর সমাধান বিলম্বিত হচ্ছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে।
দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে মাসিকভাবে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকগুলো ২০০৬ সাল থেকে চালু ছিল। বন্দরের শূন্যরেখায় আয়োজিত বৈঠকগুলোতে কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টসহ বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিরা অংশ নিতেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হতো। কিন্তু ১১ মাস ধরে বৈঠক বন্ধ থাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ স্থলপথ বাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়। আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে শিল্প কারখানার কাঁচামাল, ওষুধ, শিশু খাদ্য, কসমেটিকস এবং গার্মেন্টস পণ্য। রপ্তানিপণ্যের তালিকায় রয়েছে পাটজাত সামগ্রী, তৈরি পোশাক, কেমিকেল, প্লাস্টিক এবং মাছ।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম বলেন, “বৈঠক বন্ধ থাকায় প্রতিদিনই নানা সমস্যার মুখে পড়ছি। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বাণিজ্য বৈঠক চালু করা এখন সময়ের দাবি।”
ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, “বছরে এই বন্দর দিয়ে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার আমদানি এবং ১০ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি হয়ে থাকে। বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে মাসিক বৈঠক চালু রাখা জরুরি। আশা করছি, দুই দেশই দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।”
বেনাপোল স্থলবন্দরের ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক শামিম হোসেন জানান, “আগে প্রতি মাসেই বৈঠক হতো, এখন কোনো সমস্যা হলে ফোনে যোগাযোগ করতে হয়। তবে সরকার থেকে নির্দেশনা এলে বৈঠক আবার চালুর জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবো।”
বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে বেনাপোল দিয়ে আগের তুলনায় প্রায় ৬০ শতাংশ বাণিজ্য কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকে গতিশীল রাখতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে হস্তক্ষেপ এবং বৈঠকগুলো পুনরায় চালু করা একান্ত প্রয়োজন।