শিরোনাম
◈ গাজীপুরে আসন বাড়বে, কমবে বাগেরহাটে: ইসি ◈ জোয়ারের তোড়ে ভেসে গেল সড়ক, দুর্ভোগে ২০ হাজার বাসিন্দা ◈ রামগতির সাথে বয়ারচরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, জোয়ারের তোড়ে ব্রিজের মাটিতে ধ্বস ◈ ৫ ডি‌সেম্বর ২০২৬ সা‌লের ফুটবল বিশ্বকা‌পের ড্র ◈ কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে বাকৃবিতে অনুষদীয় গেটে তালা দিলো শিক্ষার্থীরা ◈ উরুগু‌য়ে‌কে হা‌রি‌য়ে নারী কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিল ◈ সাপ ধরতে গিয়ে সাপের কামড়ে সাপুড়ের মৃত্যু ◈ ৫ আগস্ট ঘিরে নিরাপত্তা হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ নিউইয়র্ক বন্দুক হামলা: হামলাকারীর চিরকুটে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য ◈ ২০২৪ সালে জাতীয় পার্টির আয় ২ কেটি ৬৪ লাখ টাকা

প্রকাশিত : ০৮ জুলাই, ২০২৫, ০৮:১৬ রাত
আপডেট : ৩০ জুলাই, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জলাবদ্ধতা, যোগাযোগ বিপর্যয় ও পাহাড়ি এলাকা থেকে বাসিন্দা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত, পাহাড়ধসের শঙ্কা

এম.আর. আমিন, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জনজীবন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ, বিশেষ করে মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাত নগরজুড়ে ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে। এতে ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা, দেখা দিয়েছে পাহাড়ধসের শঙ্কা।

নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে
বহদ্দারহাট, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ, খাতুনগঞ্জ, হালিশহর, চকবাজার, কদমতলী, ওআর নিজাম মোড়, দুই নম্বর গেইট, লালখান বাজার ও বায়েজিদ বোস্তামীসহ নগরীর একাধিক এলাকায় ঘরবাড়ি ও দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। নগরবাসী অভিযোগ করছেন, প্রতিবছর একই দুর্ভোগের পুনরাবৃত্তি হলেও আগাম প্রস্তুতি নেয় না সিটি করপোরেশন বা ওয়াসা।

ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং খাল-ড্রেন অব্যবস্থাপনার কারণে পানি নিষ্কাশনে দীর্ঘ সময় লাগছে বলে জানান স্থানীয়রা।

বন্দর কার্যক্রমেও ব্যাঘাত
পতেঙ্গা ও আগ্রাবাদ এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার পরিবহন ও লোড-আনলোড কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘ জলাবদ্ধতা পরিস্থিতিকে নজরে রেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে শতাধিক পরিবার
পাহাড়তলী, লালখান বাজার ও রেললাইনের পাশের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি বসতিতে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস ইতোমধ্যে কয়েকশ’ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, “নগরের অনেক জায়গায় রাস্তা উঁচু আর সংযোগ রাস্তাগুলো নিচু। ড্রেন বারবার পরিষ্কার করলেও সুফল মিলছে না। প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে রাস্তাগুলো সমতল করা দরকার।”

তিনি জানান, সিটি করপোরেশনের জরুরি টিম মাঠে কাজ করছে এবং পানি জমার খবর পাওয়া মাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

প্রশাসনের সতর্কতা ও আশ্রয়কেন্দ্র
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, “পাহাড়ধসপ্রবণ এলাকায় মাইকিং, নজরদারি ও জোনভিত্তিক কমিটি গঠন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। আশ্রয়ের জন্য স্কুল ও কমিউনিটি সেন্টার খোলা রাখা হয়েছে।”

আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, “দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা ও সিলেট বিভাগে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাত আরও ৪৮ ঘণ্টা বাড়তে পারে।”

ঝুঁকিপূর্ণ লিংক রোডে সিডিএ’র সতর্কতা
চট্টগ্রাম শহরের যানজট নিরসনে নির্মিত বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড খুলে দেওয়া হয় এক বছরের বেশি সময় আগে। কিন্তু সড়কটির দুই পাশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে খাড়া ১৬টি পাহাড় এখনও অপসারণ বা নিরাপদ করা হয়নি। ভারী বৃষ্টির প্রভাবে পাহাড়গুলোতে ধস দেখা দিয়েছে।

পরিস্থিতি বিবেচনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরামর্শে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সড়কটি সাময়িকভাবে যান চলাচলের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়