শিরোনাম
◈ এপ্রিল মাস জাতীয় নির্বাচনের জন্য উপযোগী নয়: মির্জা ফখরুল (ভিডিও) ◈ কোরবানির মৌসুমে ঢাকামুখী দুই হাজার দিনাজপুরের কসাই, জনপ্রতি লক্ষাধিক টাকার আয় লক্ষ্যমাত্রা ◈ ন্যায়বিচার ও ভোটের সমতল মাঠ চায় জাতি: জামায়াত আমির ◈ জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে দেশের মঙ্গল কামনায় দোয়া চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ◈ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় বায়তুল মোকাররমে বিশেষ মোনাজাত ◈ ঈদের আগের দিন সড়কে প্রাণ গেল ২০ জনের ◈ প্রধান উপদেষ্টাকে নরেন্দ্র মোদির ঈদ শুভেচ্ছা ◈ আজ দেশে উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা: প্রস্তুত ঈদগাহ ও মসজিদ, নিরাপত্তা জোরদার ◈ ঈদের দিন যেমন থাকবে আবহাওয়া ◈ ২০২৬ সালের এপ্রিলে জাতীয় নির্বাচন: ড. ইউনূসের ঘোষণা ও ইইউর প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত : ০৬ জুন, ২০২৫, ০৩:৫৫ রাত
আপডেট : ০৭ জুন, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আ.লীগ নেতার কারাগারে বসে মোবাইল ব্যবহার, অতঃপর...

ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু—এমন অভিযোগে কারা প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

কারা সূত্রে জানা গেছে, তিনি ফোনে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগসহ তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত রাখার পাশাপাশি অপরাধ জগতের সন্ত্রাসীদের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন।

ফোন ব্যবহারের বিষয়টি তার ঘনিষ্ঠজনরা জানলেও তা প্রকাশ করা হয়নি এতদিন। তবে ঝিনাইদহ জেলার অনেকের সাথে মোবাইল ফোনে মাঝেমধ্যে তিনি কথা বলেন—এমন কথা লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর জেলা কারা কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছে এবং তোলপাড় শুরু হয়েছে। এরপর অতি গোপনীয়ভাবে তাকে ঝিনাইদহ কারাগার থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে চাঞ্চল্যকর ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে অপহরণ ও হত্যা মামলায় হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়েছে। উল্লেখ্য, সাবেক এমপি আনারকে ভারতে সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি অভিজাত ফ্ল্যাটে খুন করে তার লাশ গুম করা হয়।

কারা সূত্র আরও জানায়, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে কারা কর্মচারীদের সহায়তায় তিনি এই সুবিধা পাচ্ছিলেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর তাকে গোপনে ঝিনাইদহ জেলা কারাগার থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: ঝিনাইদহ জেলা কারাগারের জেল সুপার আবু ইউসুফ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ‘আমি আসার আগেই কারাগারে বসে মিন্টু মোবাইল ব্যবহার করেছেন বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং কারা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে একজন বন্দি কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করতে পারে—এমন প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

আলোচিত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার: সাইদুল করিম মিন্টু ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। গত বছরের ১১ জুন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্তে উঠে আসে, ভারতে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে সাবেক এমপি আনারকে খুন করে তার মরদেহ গুম করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগে আলোচনায় থাকা মিন্টু ২০১১ সালে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন এবং একটানা ১১ বছর ক্ষমতায় থাকেন। ২০১৫ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ২০২২ সালেও পুনরায় এই পদে বহাল থাকেন।

তার বিরুদ্ধে জমি দখল, হত্যা, ঘুষ, নিয়োগ-বাণিজ্য, সোনা চোরাচালানসহ অন্তত ৬টি হত্যা মামলার অভিযোগ রয়েছে। বিরোধী মত দমনে তার বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল করে বাগানবাড়ি, শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ও রাজধানীর অভিজাত এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট এবং বিদেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

দুদক একাধিকবার তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালালেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি বলে জানা গেছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মিন্টু আওয়ামী লীগের একটি শক্তিশালী অংশের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও দলের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ গড়ে ওঠেনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পরিস্থিতি বদলে যাওয়ায় দলীয় অবস্থান নিয়েও আলোচনা চলছে।

অতীত অভিযোগ-

সাইদুল করিম মিন্টুর বিরুদ্ধে ২০১৩ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে সংঘটিত একাধিক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—

২০১৪ সালে শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা আব্দুল গফফার বিশ্বাস হত্যা

২০১৫ সালে মডার্ন মোড়ে তরিকুল ইসলাম হত্যা

২০২১ সালে সদর উপজেলার খাজুরা এলাকায় আবনকে হত্যা

২০২২ সালে সরকারি কলেজছাত্র ভিপি মুরাদসহ দুই শিক্ষার্থীকে হত্যা

তাছাড়া বিরোধী রাজনৈতিক কার্যালয়ের জমি দখল করে বানানো হয়েছে বিপণি বিতান, আমোদ-প্রমোদের জন্য তৈরি করা হয়েছে বাগানবাড়ি, এমন নানা অভিযোগ ঘিরে তার নাম বারবার আলোচনায় এসেছে।

বন্দি অবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর এটি ঘিরে শুরু হয়েছে প্রশাসনিক তদন্ত। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এই নেতার বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ ও তার চক্রের কার্যক্রম নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা তৈরি হয়েছে। উৎস: নিউজ২৪

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়