এন এ মুরাদ, মুরাদনগর : মুরাদনগরে টেক্সটাইল রঙ ও বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে টমেটো সস, ভিনেগার, মটরশুঁটি ও পানীয়। অনুমোদনহীন এই কোম্পানি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে কারখানা পরিচালনা করছে দীর্ঘদিন।
উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের পান্তি বাজার থেকে পাঁচপুকুরিয়া সড়কের ২নং মাইল ফলকের ঠিক পাশেই অবস্থিত মিরাজ ফুড প্রোডাক্টস অবৈধ কারখানা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কারখানার মালিক রাকিবুল ইসলাম (৩০) মিরাজ ফুড প্রোডাক্টস নামে বিষাক্ত রঙ ও ক্যামিকেল দিয়ে টমেটো সস, চিলি সস, অরেঞ্জ জেলি, গোলাপজল, ভিনেগার, কেওড়া জল, বেকিং পাউডার, কর্নফ্লাওয়ার, সরিষা তেলসহ নানারকম খাদ্য তৈরি করছেন। এসব অনুমোদনহীন খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার কনফেকশনারি, হোটেল ও রেস্টুরেন্টে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কারখানার শ্রমিকরা সকলে ভেজাল খাদ্য তৈরির কাজে ব্যস্ত। কথা হয় একজন শ্রমিকের সাথে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শ্রমিক জানান, " ক্ষতিকর টেক্সটাইলের রং ও কেমিক্যাল দিয়ে এসব খাদ্য তাঁরা তৈরি করছেন। তাদের কোনো ক্যামিস্ট নেই। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই ভুয়া লগো ও স্টীকার লাগিয়ে এ ব্যবসা করছেন। ওই শ্রমিক আরো জানান, আমরা সব জেনেও পেটের দায়ে ভেজাল খাদ্য উৎপাদনে শ্রমিকের কাজ করি।
স্থানীয়রা জানান, এখানে অবৈধভাবে খাদ্য উৎপাদন করে বিভিন্ন নামে স্টীকার লাগিয়ে বাজারাত করা হয় । বিষাক্ত এই খাদ্য খেয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। খুব বেশি গোপনীয়তা রক্ষা করে কারখানা পরিচালনা করা হয়। সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ।
সচেতনমহলের দাবি- জনস্বার্থে প্রশাসনের উচিত দ্রুত এ অবৈধ কারখানাটি বন্ধ করে রাকিবুল ইসলামকে আইনের আওতায় আনা। ভেজাল খাদ্য খেয়ে মানুষের কিডনি ড্যামেজসহ মরনব্যাধি ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছে।
অনুমোদনহীন এই কোম্পানী কিভাবে পরিচালনা করছেন জানতে চাইলে রাকিবুল ইসলাম জানান, আগে অন্য জায়গায় ছিলো। এখানে আনার পর কোনো কাগজপত্র করা হয়নি। কাগজপত্রের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
কুমিল্লা বিএসটিআই মুরাদনগর অঞ্চলের ফিল্ড অফিসার, মো. ইকবাল আহমেদ জানান, মুরাদনগরে মিরাজ ফুড প্রোডাক্টস কিংবা ভিনেগার, সস তৈরি করে এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নেই। কেউ এই ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করে বাজারজাত করে থাকলে তা সম্পূর্ণ বেআইনী।
মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাকিব হাসান খান বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া কেউ খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।