শিরোনাম
◈ ২০ নেতার সঙ্গে দুই দফায় সাক্ষাৎ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ◈ মেয়র হিসেবে শপথ নিতে হাইকোর্টে ইশরাক হোসেনের রিট ◈ ঐকমত্য না হওয়া বিষয়গুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে: আলী রীয়াজ ◈ রপ্তানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, মার্কিন বাজারে প্রবেশে বাংলাদেশের জন্য কঠিন সময়: জাতিসংঘের সতর্কবার্তা ◈ চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দিচ্ছি না: প্রেস সচিব (ভিডিও) ◈ এনবিআর বিলুপ্তির প্রতিবাদে কর্মবিরতি: কার্যত অচল আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবন ◈ সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে যে পোস্ট দিলেন প্রেসসচিব ◈ পর্দার আড়ালে যা ঘটেছে! ◈ চরম গরমে স্বস্তি আনতে হজ রুটে ঠান্ডা ও রাবারযুক্ত রাস্তা চালু করলো সৌদি আরব

প্রকাশিত : ২৫ মে, ২০২৫, ০২:৩৭ রাত
আপডেট : ২৫ মে, ২০২৫, ০৩:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফলের দোকানের পেছনে লুকানো ট্র্যাজেডি: দত্তক ছেলের হাতে মা খুন

­যশোরে দত্তক ছেলের বিরুদ্ধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার শহরের মনিহার এলাকার ফলপট্টিতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ঘটনাটি জানতে পেরে বিকেল ৫টার দিকে নিহত খালেদা খানম রুমির (৫৫) লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত ছেলে শেখ শামসকে (২২) আটক করেছে। নিহত খালেদা ওই এলাকার মৃত শেখ শাহজাহানের স্ত্রী।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোনো সন্তান না থাকা খালেদা তিন মাস বয়সে শামসকে দত্তক নিয়েছিলেন। সেই ছেলের নামে ফলপট্টিতে প্রতিষ্ঠিত শামস মার্কেটের দ্বিতীয় তলার বাসায় তিনি ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন। আজ সকালে মার্কেটের দোকানদারেরা পানি না পাওয়ায় খালেদাকে ডাকাডাকি করেন। তবে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চলে যান। পরে দুপুরে আবার ডাকাডাকি করলে ভেতর থেকে কেউ দরজা না খোলাতে তাঁরা ৯৯৯ নম্বরে কল দেন।

খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা এসে ডাকাডাকি করলে শামস বাসার দরজা খোলেন। এ সময় পুলিশ ও দোকানদারেরা খালেদার খোঁজ নিলে বাড়িতে নেই বলে জানিয়ে দেন। পরে পুলিশের সন্দেহ হলে খালেদার কক্ষের দরজার কাছে গেলে শামস দরজা খুলতে নিষেধ করেন। একপর্যায়ে তিনি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, আগের দিন শুক্রবার রাত ১টার দিকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাকে হত্যা করেছেন এবং কক্ষে মায়ের লাশ রয়েছে।

পুলিশ পরে স্বজনদের উপস্থিতিতে খালেদার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত ছেলেকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশ ও খালেদার স্বজনেরা জানান, শামস মাদকাসক্ত। তিনি বিভিন্ন সময়ে মাদকের টাকার জন্য মাকে মারধর করতেন।

প্রত্যক্ষদর্শী নাসির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শামস মার্কেট এই অঞ্চলের বৃহৎ ফলপট্টি। সকালে নিচের দোকানগুলোতে পানি না পাওয়ায় আমরা দ্বিতীয় তলাতে এসে খালেদাকে ডেকে না পেয়ে চলে যাই। পরে দ্বিতীয়বার দুপুরের পরে আবার ডাকাডাকি করি। তার ফোনও বন্ধ পাই। কেউ দরজা না খোলাতে আমরা জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল দিই। কল দিলে পুলিশ এসে অনেক ডাকাডাকি করলে অবশেষে শামস দরজা খোলে। সে জানায় তার মা খুলনাতে গেছে। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার মাকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে জানায়।’

নাসির হোসেন আরও বলেন, ‘খালেদার কোনো সন্তান নেই। দত্তক নিয়ে শামসকে বড় করেছে। সে-ই তিন মাস বয়স থেকে ছেলের মতো করে মানুষ করেছে। শহরের সবচেয়ে নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দাউদ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়িয়েছে। নেশাগ্রস্ত হওয়াতে ক্লাস নাইনের পর সে আর পড়াশোনা করেনি। তারপরও শামসকে অনেক ভালোবাসত খালেদা। এমনকি এই মার্কেট তার নামে লিখে দিয়েছে। তারপরও সে জঘন্য কাজটি করল তার মায়ের সাথেই।’

খালেদার ভাইয়ের ছেলে যশোর নগর বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক জুবায়ের তানভীর সিদ্দিকী বলেন, ‘প্রায় শুনতাম শামস আমার ফুপুকে মারধর করত। মাদকাসক্ত ছিল সে। নিজের ছেলে না হলেও তাকে ছেলের মতো মানুষ করেছে ফুপু। অথচ সেই মাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে সে। এই হত্যার বিচার দাবি করছি।’

এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ছেলেটি মাদকাসক্ত। কী কারণে এই হত্যা সেটার তদন্ত চলছে। ছেলেটি আমাদের হেফাজতে রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে।’ উৎস: আজকের পত্রিকা।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়