শিরোনাম
◈ পাকিস্তানের যে বিমান ভারতীয় জেনারেলদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে! ◈ ভারতের আগ্রাসী আচরণ এবং উস্কানিমূলক বিবৃতি’! নিরাপত্তা পরিষদে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে নালিশ জানাচ্ছে পাকিস্তান ◈ স্প‌্যা‌নিশ লিগ, অ‌নেক ঘাম ফে‌লে জিত‌লো রিয়াল মা‌দ্রিদ ◈ পা‌কিস্তান সুপার লি‌গে রিশাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পরও ম্যাচ হারল লাহোর ◈ ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে শহীদ হওয়া ৯৩ জনের তথ্য প্রকাশ করলো হেফাজত ◈ মুসলিমদের পক্ষে কথা বলায় ব্যাপক অপমানের শিকার স্বামী হারানো সেই হিমাংশী! ◈ গত ১৬ বছরেও ২০০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি, অথচ মাত্র কয়েক মাসে ২৬৬ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, এটা কীভাবে সম্ভব: মাহফুজ আনাম ◈ বাংলাদেশ-পাকিস্তান সীমান্তে ১৬টি ব্যাটালিয়ন ও ২ হেডকোয়ার্টার করবে বিএসএফ ◈ বাজেট ২০২৫-২৬: আকার কমিয়ে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানার চেষ্টা ◈ মাইগ্রেশন অ্যান্ড মবিলিটি চুক্তির সম্ভাবনা ইতালির সঙ্গে

প্রকাশিত : ০৩ মে, ২০২৫, ০৫:৪৯ বিকাল
আপডেট : ০৫ মে, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

টাঙ্গাইলে ৫ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজ নির্মাণেরকাজ, ঠিকাদার লাপাত্তা

আরমান কবীর : টাঙ্গাইলের বাসাইলে ঝিনাই নদীর ওপর একটি ব্রিজের নির্মাণকাজ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। প্রায় ছয় মাস আগে কাজটি ফেলে রেখে লাপাত্তা হয়েছেন ঠিকাদার। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসাইল ও মির্জাপুর উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ। নদীটির দুইপাড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৌকায় করে প্রতিনিয়ত পারাপার হতে হচ্ছে।

জানা গেছে, বাসাইল ও মির্জাপুর উপজেলার সংযোগস্থল কাঞ্চনপুর কাজিরাপাড়া এলাকায় ঝিনাই নদীর ওপর ব্রিজটি প্রায় ১০ বছর আগে পানির ¯্রােতে ভেঙে যায়। এরপর ২০২০ সালে ২৭ কোটি ২৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮৮ টাকা ব্যয়ে সেখানে নতুন করে ২৫৬ মিটার গার্ডার ব্রিজের অনুমোদন হয়। কাজটি পায় হায়দার কনস্ট্রাকশন প্রাইভেট লিমিটেড এন্ড মো. লিয়াকত আলী জেবি নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ওই বছরের ১৮ মার্চ নতুন ব্র্রিজের কাজ শুরু করে। ব্রিজটির নির্মাণকাজ ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও দীর্ঘ পাঁচ বছরেও শেষ করতে পারেনি। ঠিকাদানী প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৬ মাস আগে নির্মাণকাজটি বন্ধ রেখে রাতের আধাঁরে পালিয়ে যায়। এই দীর্ঘ ছয় মাসেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কেউই ব্রিজটি দেখতেও আসেনি।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান বলেন, ‘একজন মানুষ মারা গেলে প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক ঘুরে লাশ দাফন করতে হয়। ব্রিজটির কারণে নদীর দুইপাড়ের মানুষের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্ভোগ লাগবে এই নদীতে ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলমান ছিল। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ ফেলে রেখে চলে গেছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল আলম খান বলেন, ‘এই ব্রিজটি বাসাইল ও মির্জাপুর উপজেলার জন্য খুবই জরুরি। এই ব্রিজ দিয়ে লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতস্থল। এখানে একটি ঈদগা মাঠ রয়েছে, সেখানে ছয়টি গ্রামের মানুষ একত্রে ঈদের নামাজ আদায় করেন। এছাড়াও তিনটি গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য একটি কবরস্থান রয়েছে। মানুষ মারা গেলে নৌকায় করে লাশ নিয়ে দাফন করতে হয়। নদীর দুইপাড়ে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ব্রিজ না থাকায় শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ নৌকাযোগে পারাপার হচ্ছে। প্রায় ছয় বছর ধরে ব্রিজের নির্মাণকাজ চলমান ছিল। এই দীর্ঘ সময়েও কাজটি শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। এমতাবস্থায় প্রায় ছয় মাস হলো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রিজের নির্মাণকাজ বন্ধ করে পালিয়ে গেছে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফুজ্জামান বক্তার বলেন, ‘কাঞ্চনপুর কাজিরাপাড়ায় ঝিনাই নদীর ওপর ২৬৬ মিটার ব্রিজের কাজটি ২০১৯ সালে টেন্ডার হয়। ঠিকাদানী প্রতিষ্ঠান শুরুতেই বিলম্ব করে কাজ শুরু করে। প্রথমে কাজের কিছুটা অগ্রগতি ছিল। এক বছর পর থেকে কাজের গতি কমে যায়। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন- ঠিদাকারী প্রতিষ্ঠান যদি যথা সময়ে কাজ না করে তাহলে টেন্ডার বাতিল করা হবে। ব্রিজটির কারণে অসংখ্য মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে। ব্রিজটি দ্রুতসময়ের মধ্যে নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

বাসাইল উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাত্তাউর রহমান বলেন, ‘বাসাইল উপজেলার কাজিরাপাড়ায় ঝিনাই নদীর ওপর ২৫৬ মিটার ব্রিজের কাজ চলমান রয়েছে। এই কাজটির বর্তমানে অগ্রগতি ৬০ শতাংশ। বেশ কিছুদিন ধরে কাজটি বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন সময় ঠিকাদারকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা কাজ শুরু করে আবার বন্ধ করে দেয়। কাজটি বাতিলের জন্য আমাদের জেলা কার্যালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যেহেতু কাজটি অনেক ধরে বন্ধ রেখেছে ঠিকাদার। সুতরাং কাজটি বাতিল করার জন্য আবার সুপারিশ করা হবে। কাজটি বন্ধ রাখায় ঠিকাদারকে জরিমানার আওতায় আনার জন্য প্রস্তাব করা হবে। রি-টেন্ডার করে খুব দ্রুত কাজটি শেষ করা হবে।’

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাইড ইঞ্জিনিয়ার মো. আখতার হোসেন বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকিং-এ সমস্যা হচ্ছে। এজন্য কাজটি বন্ধ রয়েছে। আমাদের সাথে ন্যাশনাল ব্যাংকের চুক্তি রয়েছে। সেখানে আমার একটি বিল পড়ে আছে। ব্যাংকিং-এ সমস্যা সমাধান না হলে তো ব্রিজের কাজটি আমাদের করতে দিবে না।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও )মোছা. আকলিমা বেগম বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রকৌশলীর সাথে কথা হয়েছে। মূলত ঠিকাদারের কারণে কাজটি বন্ধ রয়েছে। তার প্রেক্ষিতে ঠিকাদারকে সর্বশেষ পত্র দিয়েছে কাজটি করার জন্য। ঠিকাদার কাজটি না করলে পুনরায় টেন্ডার করে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ কাজটি দ্রুত শেষ করবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়