তার আপন মামা গোলাম নাসির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা মামলায় এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ফরিদপুর জেলা কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা। তার আপন মামা গোলাম নাসির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা মামলায় এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন।
এরইমাঝে গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্য সচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয় মো: আব্দুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয় মো: রাকিব হোসেনকে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা- ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী থেকে দু’জন করে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দু’জনের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা।
চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের টিমকে বলা হয়েছে, উক্ত টিমকে উল্লেখিত অঞ্চলের কেন্দ্রীয় কমিটির এই সদস্যদের সাথে সমন্বয় করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কমিটির প্রস্তাবনার নির্দেশনার প্রদান করা হলো।
জানা গেছে, সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের রয়েছে তার। তার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। তবে ১০ বছর ধরে আমি আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপালবিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি বলেন, “সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনো ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত ছিলাম না, তাহলে আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
‘সৈয়দা নীলিমা দোলার সাথে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই’ উল্লেখ করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেয়া হলে ভালো হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’