শিরোনাম
◈ 'মৌসুম যেমনই হোক, বন্ধুত্ব থাকবে', ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্কের ‘বরফ গলছে! (ভিডিও) ◈ এশিয়া কাপে তিনবার মুখোমুখি হতে পারে ভারত ও পাকিস্তান ◈ শাহজালালে যাত্রীর সঙ্গে ঢুকতে পারবেন ২ জন, আজ থেকে কার্যকর ◈ মাইলস্টোন স্কুলের দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের জরুরি চিকিৎসা সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ◈ জামায়াতের সমাবেশে খরচের পরিমাণ যা জানা গেল ◈ চাঁদাবাজির খবর দেখে আশপাশের সবাই এত অবাক হওয়ার ভান করছেন বিষয়টা কিছুটা হাস্যকর বটে: উমামা ফাতেমা ◈ বাংলা‌দেশ এবার সি‌রিজ খেল‌তে চায় নেপাল অথবা নেদারল্যান্ডসের সাথে ◈ নতুন মেরুকরণের পথে দেশের রাজনীতি ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম‌্যা‌চে দ‌ক্ষিণ  আফ্রিকাকে হা‌রি‌য়ে চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড ◈ ৯ সে‌প্টেম্বর এশিয়া কাপ শুরু, বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১১ সেপ্টেম্বর

প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:৫৮ সকাল
আপডেট : ২২ জুলাই, ২০২৫, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইসলামী ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখাতেই এস আলমের খেলাপি ঋণ ৫০ হাজার কোটি টাকা

চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্প গ্রুপ এস আলম সংশ্লিষ্ট ১৭টি প্রতিষ্ঠানের কাছে শুধু ইসলামী ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখাতেই ৫০ হাজার কোটি টাকার অধিক খেলাপি ঋণ রয়েছে। ব্যাংকটি এসব খেলাপি ঋণের টাকা উদ্ধারে আটঘাট বেঁধে নেমেছে। এক দিকে ঋণখেলাপি এসব প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি নিলামে তোলা হয়েছে, অন্য দিকে ঋণের গ্যারান্টিতে জমা দেয়া চেকের বিপরীতে ইতোমধ্যে চেক প্রতারণার দায়ে দায়েরকৃত সি. আর মামলার সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকটির সূত্র জানিয়েছে, এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট ১৭টি প্রতিষ্ঠানের নামে ইসলামী ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখা হতে নেয়া ঋণের মধ্যে ৫০ হাজার কোটি টাকার অধিক ঋণ ইতোমধ্যে খেলাপি হয়েছে। এসব ঋণের বিপরীতে যেসব সম্পত্তি বন্ধক রাখা হয়েছে এবং বিভিন্ন ব্যাংকের এফডিআরকে লিয়েন করা হয়েছে এবং চেক প্রদান করা হয়েছে এসব দিয়ে ঋণের টাকা উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে ব্যাংকটি। তবে যেসব সম্পত্তি বন্ধক রাখা হয়েছে সেসব ইতোমধ্যে নিলামে তোলা হলেও তা থেকে মোট খেলাপি ঋণের ১০ শতাংশও আদায় করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ব্যাংক সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। তবে বন্ধকি সম্পত্তি ছাড়াও ঋণের বিপরীতে দেয়া চেকের টাকা আদায়ের জন্য মামলা দায়ের এবং ঋণের বিপরীতে বিভিন্ন ব্যাংকের এফডিআর লিয়েন করে যে ঋণ নেয়া হয়েছে তা থেকে আরো ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ আদায় সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। সূত্রগুলো জানিয়েছে, ব্যাংকের কাছে থাকা সব টুলস ব্যবহার করেও ৫০ শতাংশের বেশি ঋণ আদায় সম্ভব হবে না। এর ওপর আবার যেসব এফডিআর লিয়েন দিয়ে ঋণ দেয়া হয়েছে সেসব এফডিআর দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বিএফআইইউ দ্বারা ফ্রিজ করায় তাও ব্যাংকটি আদায় দেখাতে পারছে না। এ ধরনের আদায়যোগ্য প্রায় ২২শ’ কোটি টাকা রয়েছে বলেও সূত্র জানায়।

যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে খেলাপি ঋণ : ইসলামী ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখার এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে, এস আলম ভেজিটেবল অয়েল, সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড, গ্লোবাল ফিডিং করপোরেশন, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, জেনেসিস টেক্সটাইলস, ডেলটা অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, সাবোলা অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, ইনফিনিট সিআর স্ট্রিপ ইন্ডাস্ট্রিজ লি:, এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস লিমিটেড, এস আলম স্টিল মিলস, এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি প্রা: লিমিটেড, মেসার্স আদিল করপোরেশন, সেঞ্চুরী ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড (সাবেক সেঞ্চুরী ফ্লাওয়ার মিলস), ইনফিনিয়া সিনথেটিক ফাইবার লিমিটেড এবং সাদিয়া ট্রেডার্সের নাম রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বোচ্চ ১২ হাজার কোটি টাকার অধিক খেলাপি প্রতিষ্ঠান এস আলম ভেজিটেবল অয়েল এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠান এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ। এ ছাড়া এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস লিমিটেডের খেলাপি ঋণ প্রায় দুই হাজার ১৮০ কোটি টাকা, আদিল করপোরেশনের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১২৬৫ কোটি টাকা, সেঞ্চুরী ফুডের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯০১ কোটি টাকা।

চট্টগ্রামের আদালতে শতাধিক সি আর মামলা : এ দিকে আদালত সূত্র জানিয়েছে, এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ আদায়ে চট্টগ্রামের মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতিদিনই দায়ের হচ্ছে ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত চেক প্রতারণার মামলা। শুধুমাত্র ইসলামী ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার পক্ষ থেকেই ১০১টি চেক প্রতারণার মামলা রুজু হয়েছে বলে আদালত সূত্র জানায়। সূত্র মতে, বন্ধকী সম্পত্তির পাশাপাশি চেকের বিপরীতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা আদায়ের সুযোগ রয়েছে। তাই বিগত সরকারের আমলে লোপাট হওয়া অর্থ উদ্ধারে সে পথেই হাঁটছে ব্যাংকগুলো। সূত্র জানিয়েছে, ইসলামী ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার দায়েরকৃত এসব সি আর মামলায় দাবিকৃত টাকার পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকার অধিক।

চেকের মামলা দায়েরের পাশাপাশি ব্যাংকটি এসব ঋণের বিপরীতে বন্ধকীকৃত স্থাবর সম্পত্তিও নিলামে তুলছে। ইতোমধ্যে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে এসব নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ব্যাংকটির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, খেলাপি ঋণ আদায়ে যত ধরনের আইনি ব্যবস্থা রয়েছে সবই নেয়া হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়