শিরোনাম
◈ ২০২৫-২৬ অর্থবছর: বাড়তে পারে সেবা মাশুল, সুদ, টোল ও ইজারামূল্য ◈ কেন দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, ‘স্ট্রেইট কাট’ জানালেন পিনাকী ভট্টাচার্য (ভিডিও) ◈ ভয়াবহ নতুন তথ্য বাংলাদেশসহ ৮ দেশে অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে ◈ ১৪ হাজারের বেশি হজযাত্রীর ভিসা এখনো হয়নি ◈ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জরুরি বৈঠক, ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি ◈ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য জামায়াতের রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাবে যা বলল মিয়ানমার ◈ বিমানের বিশেষ সুবিধা ফিরিয়ে দিলেন খালেদা জিয়া ◈ সরকারের হস্তক্ষেপ না থাকায় গণমাধ্যম সূচকে উন্নতি : মাহফুজ আলম ◈ বাংলাদেশ সফর কর‌বে ভারত, বাতিলের শঙ্কা উড়িয়ে দিল বিসিবি ◈ ২ কৃষককে ফেরত পাওয়ায় ২ ভারতীয়কে ছেড়ে দিল বিজিবি (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৭ জুলাই, ২০২৪, ০৬:১০ বিকাল
আপডেট : ০৯ মার্চ, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছেলে হত্যার বিচার কার কাছে চাইবো: নিহত আলমগীরের বাবা

ফয়সাল চৌধুরী, কুষ্টিয়া: [২] ঢাকায় গত ১৯ জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রামপুরায় বিটিভি ভবন এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন কুষ্টিয়ার বাসিন্দার ও গাড়িচালক আলমগীর শেখ। আলমগীর কুমারখালীর উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামের মুদি দোকানি ইজারুল হকের ছেলে।

[৩] ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার গুলিবিদ্ধ মরদেহটি গত রোববার (২১ জুলাই) গ্রামের বাড়িতে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। 

[৪] নিহত আলমগীরের বাবা ইজারুল হক বলেন, সংসারের হাল ধরতে জীবিকার তাগিদে প্রায় ২০ বছর আগে রাজধানী ঢাকায় যায় বড় ছেলে আলমগীর শেখ। গত ৮ বছর ধরে ঢাকার রামপুরা এলাকায় হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের গাড়ির চালক হিসাবে কর্মরত ছিলো। এতে যা বেতন পেতেন তা দিয়ে ছেলেমেয়ের পড়াশোনা, বাসা ভাড়াসহ সংসার চালাতে রিতিমত হিমশিম খেতে হত তাই  সময় পেলে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাত। আমি বুড়ো মানুষ। বড় ছেলেই ছিল সকলের ভরসা। ঘরের সঙ্গে ছোট দোকানে তেমন বেচাকেনা হয় না। খুব দুশ্চিন্তায় আছি পরিবার নিয়ে। আর ছেলে হত্যার বিচার কার কাছে চাইবো।

[৫] আলমগীর শেখ পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে বড়। ময়নাতদন্ত ছাড়াই গত শনিবার (২০ জুলাই) গভীর রাতে অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে লাশ পৌঁছে দেয় হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের লোকজন। আর রোববার সকালে কসবা দাড়িগ্রাম সামাজিক কবরস্থানে মরদেহটি দাফন করা হয়। পরিবারে তার বাবাসহ বয়ো:জ্যেষ্ঠ মা আলেয়া খাতুন, স্ত্রী রিমা খাতুন (৩০), মেয়ে তুলি খাতুন (১১), ছেলে আব্দুল আওলাদ (৭) ও ছোট ভাই আজাদ হক (১৮) রয়েছেন।

[৬] কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ছেলেকে হারানোর শোকে কাঁদতে কাঁদতে নিহত আলমগীর শেখের মা আলেয়া খাতুনের কান্না যেন থামছে না। নিহত আলমগীর শেখের মা আলেয়া খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে আলমগীর খুব ভালো এবং নামাজি ছিল। গুলি খেয়ে গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে ছিল। সেখানে থাকা সহকর্মীরা আমার ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও সেখানে চিকিৎসা করা হয়নি। বিনা চিকিৎসায় আমার ছেলেটা মরে গেছে। হেলিকপ্টার থেকে তিনটি গুলি করে ছেলেকে মারে ফেলেছে। আমার বেটাতো আর ফিরে আসবে না। এখন ওর বউ ছোয়ালপালের দেখবি কিডা? বাড়ি ছাড়া জাগা জমি বলতে কিচ্ছু নাই। কীভাবে চলবে ওর সংসার? সরকার যদি একটু দেখতে তবেগা বাঁচতাম।’

[৭] নিহত আলমগীর শেখের স্ত্রী রিমা খাতুন বলেন, চাকরির টাকায় সংসার চলতো না। সেজন্য ও (স্বামী) অবসরে পাঠাও অ্যাপে মোটরসাইকেল চালাতো। এখনতো সব শ্যাষ। শ্বশুর, শাশুড়ি, ছেলে, মেয়ে নিয়ে কী করে খাব? কোম্পানি ও সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। 

[৮] আলমগীরের ছোট ভাই আজাদ হক জানান, আহত আলমগীরকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যান তার কোম্পানির সহকর্মীরা। তবে চলমান পরিস্থিতিতে সেদিন হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ছিলো না। চিকিৎসা পায়নি। ফলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পর হাসপাতাল থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স করে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। শরীর থেকে গুলিও বের করা হয়নি। গুলিসহ ভাইকে কবর দেওয়া হয়েছে।

[৯] কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চারজন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ নিজ নিজ গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।

[১০] কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যম ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কয়েকটি ঘটনা শুনেছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে সরকারিভাবে তাদের সহযোগিতা করা হবে। নিহতের পরিবারের খোঁজখবর নিচ্ছি। সম্পাদনা: এ আর শাকিল

প্রতিনিধি/এআরএস

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়