ফরিদপুর প্রতিনিধি: [২] ফরিদপুরের সালথার মো. মিরাজ ঠাকুর নামে এক যুবক সাপের কামড় খেয়ে প্রথমে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। তবে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটার ভ্যাকসিন না থাকায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানেও তাকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি।
[৩] যেকারণে রবিবার (০৫ মে) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মিরাজ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এর আগে একইদিন সকাল ১০ টার দিকে মিরাজ ঠাকুরকে সাপে কামড় দেয়।
[৪] নিহত মিরাজ ঠাকুর ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামের বালিঘাটা এলাকার মৃত মকিম ঠাকুরের ছেলে। তিনি ৩ কন্যা সন্তানের জনক। নিহতের স্ত্রীর সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
[৫] তবে মেডিকেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাপে কাটার ভ্যাকসিন না থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
[৬] নিহতের পরিবার জানান, গতকাল রবিবার রাত ১০টার দিকে মিরাজ ঠাকুর নিজ বাড়ি থেকে খারদিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে তার ভাই মুরাদ ঠাকুরের বাড়িতে যাচ্ছিল। পথে একটি পাটক্ষেতের পাশ থেকে তাকে সাপে ছোবল দেয়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমল্পেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে রাত ১২ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
[৭] নিহতের স্ত্রী সাবিনা বেগম কান্নাজড়িজ কণ্ঠে বলেন, বোয়ালমারী হাসপাতালে সাপে কাটার ভ্যাকসিনই পাওয়া যায়নি। আবার ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তির পর আমার স্বামীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি। হয়তো সেখানেও ভ্যাকসিন ছিল না। ভ্যাকসিন না দেওয়ায় আমার স্বামী মারা গেছেন। হাসপাতালে যদি সাপের ভ্যাকসিন থাকতো, তাহলে এভাবে আমার স্বামী মারা যেত না।
[৮] তিনি আরও বলেন, হাসপাতালগুলো সাপে কাটার ভ্যাকসিন রাখা উচিত। যাতে আমার স্বামীর মত আর কাউকে এভাবে জীবন দেওয়া না লাগে। স্বামী হারিয়ে আমি দিশাহারা হয়ে যাচ্ছি। এখন কি হবে আমার তিনটি মেয়ের? কে দেখবে ওদের? কে চালাবে সংসার?
[৯] বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এমএম নাহিদ আল রাকিব বলেন, আমি ট্রেনিং আছি। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগে সাপে কাটার ভ্যাকসিন পাওয়া যেত। কিন্তু এখন আর ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের হাসপাতালে এসব ভ্যাকসিন সরবারহ বন্ধ রয়েছে। যেকারণে সাপের কাটার ওই রোগীকে ফরিদপুর মেডিকেলে হস্তান্তর করা হয়।
[১০] ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. দীপক কুমার বলেন, আমাদের হাসপাতালে সাপের কাটার অন্তত ১৫ টি ভ্যাকসিন থাকার কথা। তারপরেও কেন সাপে কাটার ওই রোগীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি, তা জানি না। তাই আমি ইতিমধ্যে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছি। কেন তাকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি বা কারো গাফলতি আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :