শিরোনাম
◈ ইসরায়েল খেললে বিশ্বকাপ ফুটবল বয়কট কর‌বে স্পেন ◈ এ‌শিয়া কা‌পে রা‌তে শ্রীলঙ্কা - আফগা‌নিস্তান মু‌খোমু‌খি, লঙ্কান‌দের জয় দেখার অ‌পেক্ষায় বাংলাদেশ  ◈ আওয়মী লীগ বিহীন বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে এখন যে সব চিন্তাভাবনা  ◈ চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লিগ, চেলসিকে হা‌রি‌য়ে বায়ার্ন মিউ‌নি‌খের শুভ সূচনা ◈ কিশোরগঞ্জ সম্মেলনে যাওয়ার জন্য স্থগিতাদেশ উঠিয়ে দিন, না হলে ভিন্ন পথ নেবো, জানালেন ফজলুর রহমান ◈ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন অস্থিরতা ◈ হ‌্যান্ড‌শেক না করায় অপরাধ হিসা‌বে ভারতের ম‌্যাচ ফি ৫০ ভাগ একং ২‌টি ডি‌মে‌রিট প‌য়েন্ট জ‌রিমানা হ‌তে পা‌রে ◈ এআই, কোয়ান্টাম ও নিউক্লিয়ার এনার্জিতে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের বড় চুক্তি ◈ উগ্রপন্থা, সীমান্ত অচলাবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা—বাংলাদেশসহ পাঁচ প্রতিবেশীকে ‘হুমকি’ মনে করছে ভারত ◈ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ

প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০৪:৪১ সকাল
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০৬:২১ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজধানীর বাসে ই-টিকিট, থামবে ভাড়া নৈরাজ্য!

ছবি: সংগৃহীত

ডেস্ক রিপোর্ট: অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য থেকে যাত্রীদের মুক্তির বার্তা নিয়ে এসেছে ই- টিকেটিং ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থার ফলে কাউন্টারে একটি পজ মেশিনের মাধ্যমে যাত্রীরা টিকেট কেটে গাড়িতে উঠছেন। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জনি ইসলাম শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ‘ট্রান্স সিলভা’ বাসে সায়েন্সল্যাব থেকে পল্টন পর্যন্ত ই- টিকেটিং এর মাধ্যমে যাতায়াত করেছেন ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে। শিক্ষার্থী হওয়ায় অন্যদিন অর্ধেক ভাড়া ৫ টাকা দিয়ে এ রুটে যাতায়াত করে থাকেন তিনি।

‘কিন্তু অন্য বাসে আসলে ঠিকই আমাকে এর থেকে বেশি ভাড়া দিতে হতো’ বলেন জনি।

রাজধানীর পল্টন এলাকায় এ প্রতিবেদককে শিক্ষার্থী জনি বলেন, হেলপারদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে প্রতিনিয়তই বিবাদ হতো। কিন্তু ই-টিকিটিংয়ের ফলে এখন ঝামেলা হবে না। বাকি বাসগুলোতে এই সিস্টেম থাকলে ভালো হতো।  

চলতি মাসে প্রথম ই-টিকেটিং চালু হয়েছে ট্রান্স সিলভা পরিবহনে। এরপর গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) মিরপুর-১২ নম্বর থেকে ঢাকেশ্বরীগামী ‘মিরপুর সুপার লিংক’, ঘাটারচর থেকে উত্তরাগামী ‘প্রজাপতি’ ও ‘পরিস্থান’, গাবতলী থেকে গাজীপুরগামী ‘বসুমতি পরিবহনের’ বাসে এ পদ্ধতিতে ভাড়া আদায় শুরু হয়েছে।

আগামী রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) আরও তিনটি রুটে ‘অছিম পরিবহন’, ‘রাজধানী পরিবহন’ ও ‘নূর-ই-মক্কা পরিবহনে’ চালু হচ্ছে এ পদ্ধতি। এক মাসের মধ্যে রাজধানীর সব বাসের ভাড়া আদায় ই-টিকেটিংয়ের মাধ্যমে হবে বলে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।  

এই প্রজেক্টে সফলতা আসলে পরে পুরো ঢাকা শহরেই গণপরিবহনে ই-টিকেটিং সিস্টেম চালু হয়ে যাবে।  

যাত্রীরা জানাচ্ছেন, ই-টিকেটিংয়ের ফলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। আর ওয়েবিল নামে যে ব্যবস্থা এখনো সড়কে আছে, সেটিও বন্ধ হয়ে যাবে বলেই ভাবছেন তারা।  

এ প্রসঙ্গে কথা হয় নতুন করে ই-টিকেটিং চালু করতে যাওয়া কোম্পানি নূর-ই মক্কা পরিবহনের ব্যবস্থপনা পরিচালক জামাল উদ্দিনের সঙ্গে।  

তিনি বলেন, প্রতিদিন কতো টাকা ভাড়া উঠছে সে হিসাব আগে ভালেভাবে পাওয়া যেত না। কিন্তু এখন ই-টিকেটিংয়ের ফলে সঠিক হিসাব পাওয়া যাবে। আমরা আশা করছি আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে চালু করতে পারবো।   

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ঢাকার যে ৫টি কোম্পানির কথা বলা হয়েছিল তারা ই-টিকিটিং ব্যবস্থায় যাবে সেগুলোর কয়েকটি চালু হয়েছে। বাকিগুলো রোববারের মধ্যে চালু করবে।  

‘তবে সামনে ধীরে ধীরে আমরা পুরো সিটিতেই ই-টিকেটিং ব্যবস্থা চালু করবো। এতে সড়কে পুরো শৃঙ্খলা চলে আসবে। ’ যোগ করেন এনায়েত উল্যাহ।   

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি ই-টিকিটিং ব্যবস্থার কথা। কারণ সড়কে এখনো যাত্রী প্রতি মাথাপিছু গড়ে ৭ টাকা হারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের চিত্র আমাদের সংগঠনের করা এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সেখানে দেখা যায়, রাজধানীর বাস-মিনিবাস খাতে ৫০ লাখ ট্রিপ যাত্রীর কাছ থেকে দৈনিক ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হয়। তাই ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু হলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় অনেকাংশে কমে যাবে।  

সেভ দ্য রোডের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী বলেন, শুধু ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করলেই হবে না। সেই সঙ্গে কঠোর মনিটরিং করা প্রয়োজন। বিআরটিএ থেকে যে অভিযান পরিচালনা হয়, সেগুলো সবসময় করতে হবে। শুধুমাত্র নির্দিষ্টি ঘটনার সময় করলে গণপরিবহনের সুফল পাওয়া যাবে না বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, সড়কে ই-টিকিটিং ব্যবস্থায় ফিরলে যাত্রীদের থেকে যে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হতো সেটা থাকবে না। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। কিন্তু সড়কে বাসের মানে পরিবর্তন আনা উচিত। যে বাসগুলো চলে তার অধিকাংশ লক্কড়-ঝক্কড় বাস। তাই শুধু ই-টিকিটিং ব্যবস্থায় সীমবাদ্ধ থাকলে হবে না, বাকি দিকগুলোয়ও নজর দেওয়া উচিত।  

তিনি আরও বলেন, যেখানে মানুষ টিকিট কাটবে সে যাত্রী ছাউনীর দিকেও নজর রাখা দরকার। অনেক জায়গায় যাত্রী ছাউনী থাকলেও যাত্রীদের নির্ধারিত জায়গায় অনেক সময় দেখা যায় না। আর কয়েক জায়গায় থাকলেও মানসম্মত যাত্রী ছাউনী দেখা যায় না। তাই এসব বিষয়ে নজর রাখতে হবে। তাহলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে।

এর আগে থেকেই বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা নগর পরিবহনের বাসগুলোতে ই- টিকেটিং ব্যবস্থা চালু আছে। বাসে ই-টিকেটিংয়ের মাধ্যমে মানুষ সরকারের নির্ধারিত ভাড়ায় যাতায়াত করছিলো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়