লিহান লিমা: [২] ‘প্যানডেমিক বিলিওনার’ শীর্ষক অক্সফামের প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারীতে শত শত মানুষের চাকরি চলে যাওয়ায় ১৪ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ে কিন্তু এই একই সময়ে ধনীরা আরো ধনী হয়ে উঠে। মহামারী দারিদ্র্য এবং বৈষম্যকে বাড়িয়ে তুলেছে। দ্য গার্ডিয়ান
[৩] ২০২১ সালের মার্চ নাগাদ মহামারী প্রতিরোধে প্রযোজনীয় ফার্মাসিউটিক্যালস, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং পরিষেবাগুলির চাহিদার কারণে ২০জন ধনী ব্যডক্ত ধনকুবেরের খাতায় নাম লিখিয়েছে। অন্যদিকে লকডাউন এবং অর্থনৈতিক স্থবিরতা শত শত মানুষের জীবিকা ধ্বংস করেছে।
[৪] চীন, হংকং, ভারত এবং জাপান থেকে নতুন বিলিয়নেয়ারদের মধ্যে রয়েছেন লি জিয়ানকুয়ান, তার ফার্ম, উইনার মেডিকেল, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) তৈরি করে। ডাই লিঝং এর কোম্পানি, সানসুর বায়োটেক, কোভিড -১৯ পরীক্ষা করে এবং ডায়াগনস্টিক কিট সরবরাহ করে।
[৫] এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোট বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা প্রায় এক তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালের মার্চে ৮০৩ থেকে গত বছরের নভেম্বরে ১ হাজার ৮৭ এ পৌঁছেছে এবং তাদের সম্মিলিত সম্পদ তিন-চতুর্থাংশ (৭৪%) বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এই অঞ্চলের সবচেয়ে দরিদ্র ৯০ শতাংশের চেয়ে ধনী ১ শতাংশেরই সম্পদ বেশি।
[৬] অক্সফাম এশিয়ার প্রচারাভিযানের নেতৃত্বদানকারী মোস্তফা তালপুর বলেছেন, ‘এটি আপত্তিজনক এবং অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য যে এশিয়ার দরিদ্র জনগণকে মহামারীতে বসিয়ে দিয়ে গুরুতর স্বাস্থঝুঁকি, বেকারত্ব, ক্ষুধা এবং দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দেয়া হয়েছে। যা দারিদ্রের বিরুদ্ধে দশকব্যপী লড়াইয়ের অর্জনগুলোকে নষ্ট করেছে। ধনী এবং সুবিধাভোগীদের সম্পদ বেড়েছে এবং এশিয়ার সবচেয়ে দরিদ্র মানুষ, নারী, স্বল্প-দক্ষ কর্মী, অভিবাসী এবং অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
[৭] আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতে, ২০২০ সালে, আনুমানিক ৮ কোটি ১০ লাখ চাকরি হারিয়েছে, কর্মঘন্টা হ্রাস পেয়েছে যা ২ থেকে আড়াই কোটি মানুষকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
[৮] ক্রেডিট সুইস সম্পদের ব্যবধান বাড়ায় পূর্বাভাস দিয়ে বলেছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আরও ৪২ হাজার জন ৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সম্পদের মালিক হবেন এবং মোট ৯৯ হাজার ধনকুবের হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে কোটিপতির সংখ্যা ১ কোটি ৫৩ লাখ হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। যা ২০২০ সালের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ উভয়ই বলেছে করোনভাইরাস বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক বৈষম্যের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটাবে।
[৯] মোস্তফা তালপুর বলেছেন, রাজনৈতিক ব্যবস্থা ধনী ও অভিজাতদের স্বার্থ রক্ষা করছে। মহামারী চলাকালীন সরকারগুলি সংখ্যাগরিষ্ঠের জন্য কাজ করতে ক্রমাগত ব্যর্থ হয়েছে। এটি ছিল বিশ্বব্যাপী সংহতির সন্ধিক্ষণ, কিন্তু ধনী দেশ এবং বড় বড় ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।