সাবেত আহমেদ: [২] শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমরা ৭৫ পরবর্তীতে দেখেছি, একজন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে পরিচয় দিয়েছে; কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা নিধনে সে ছিল সিদ্ধহস্ত। ১৫ আগষ্ট জাতির পিতাকে হত্যার পরে প্রথমে খুনি মোস্তাকের সরকার, তারপর স্বরূপে আবির্ভূত হয়েছিল জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করার হয়েছে নির্বিচারে। চলেছে মুক্তিযোদ্ধা নিধনের মহোৎসব। মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানিত করা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধকে অপমানিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত গোপালগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
[৩] মন্ত্রী আরো বলেন, ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানী করে যুদ্ধাপরাধিদেরকে সমাজে, রাষ্ট্রে ও রাজনীতিতে পূনর্বাসিত করা হয়েছে। শহীদের রক্তরঞ্জিত পতাকা তুলে দেয়া হয়েছে যুদ্ধাপরদাধীদের গাড়িতে। তাদেরকে বসানো হয়েছে রাষ্ট্র ক্ষমতায়। বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরকে বিদেশে চাকুরী দিয়ে সম্মানীত করার চেষ্টা হয়েছে। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে; অথচ এই দেশটি তো খুনির দেশ ছিল না, এখনও নয়।
[৪] দীপু মনি বলেন, নির্বাচনসহ সমস্ত গণতান্ত্রীক ব্যবস্থাকে একে একে ধ্বংসের চেষ্টা চালিয়ে “জয় বাংলা” ও ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে; নিষিদ্ধ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নাম নেয়াকে। তখন ইতিহাসের বিকৃতি দেখেছি প্রতি পদে পদে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানীকরণের সকল চেষ্টা সেদিন হয়েছে। জয় বাংলার বদলে পাকিস্তান জিন্দাবাদের আদোলে বাংলাদেশ জিন্দবাদ করা হয়েছে। রেডিও পাকিস্তানের আদোলে বাংলাদেশ বেতারকে বদলে রেডিও বাংলাদেশ করা হয়েছে।
[৫] শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যাকে বিধাতা তৈরীই করেছেন এই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য। সেজন্যই এক সাগর শোক পাড়ি দিয়ে, সেই শোক কে তিনি শক্তিতে রূপান্তরিত করে এই দেশের জন্য সংগ্রাম করেছেন দীর্ঘকাল। যখন মানুষ তাকে ভোট দিয়ে দেশ পরিচালনার দ্বায়িত্ব দিয়েছেন, তখন তিনি দেশকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। আবার নব উদ্যমে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করেছে তার মুক্তির লক্ষ্যে, জাতির পিতার দেখানো পথে, তার স্বপ্নের সেই সোনার বাংলা অর্জনের লক্ষ্যে।
[৬] ৭ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ শত্রæমুক্ত দিবস উপলক্ষে, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জ সুইমিং কমপ্লেক্সে “বিজয় পথে পথে” শিরোনামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক সাহিদা সুলতানার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, সহ সভাপতি সিকদার নূর হোমাম্মদ দুলু ও মুক্তিযোদ্ধা বদরুদ্দোজা বদর।
[৭] রাতে স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে বীরত্বের সাথে গোপালগঞ্জ পাক হানাদার মুক্ত করার চিত্রনাট্য প্রদর্শণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ আয়োজন শেষ হয়।