রাশিদ রিয়াজ: ভারত রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিনিময়ে কৌশলগত অংশীদার হতে চায়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের ভারত সফরকালে এ লক্ষ্যে দুটি দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও ইসরায়েল থেকে গত কয়েক বছর ধরে অস্ত্র সংগ্রহের মাধ্যমে দেশটির প্রতিরক্ষা ভান্ডার পূর্ণ করলেও এক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখবে। দি প্রিন্ট
এদিকে ফ্রান্সের কাছ থেকে গত ৫ বছরে ভারতের অস্ত্র ক্রয় বেড়ে যাওয়ায় রাশিয়া থেকে অস্ত্র ক্রয় হ্রাস পেয়েছে ৫৩ শতাংশ। রাশিয়ার অস্ত্র ক্রয়ের পাশাপাশি এসব অস্ত্র এখন ভারত নিজেদের মাটিতেই উৎপাদনের উদ্যোগ নিচ্ছে। রুশ একে ২০৩ রাইফেল এখন তৈরি হবে ভারতের উত্তর প্রদেশের আমেথি জেলায়। পুতিনের ভারত সফরকালে নয়াদিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র হস্তান্তর করা হচ্ছে। ক্ষেপণাস্ত্রটির প্রথম স্কোয়াড্রনের চালান ইতোমধ্যে ভারতে এসে পৌঁছেছে। এর পাশাপাশি রাশিয়া, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি ও আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আলোচনা হবে বলে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক মহল আভাস দিয়েছেন। বলা হচ্ছে একটি দেশের সম্পর্কের বিনিময়ে অন্যদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ভারতের লক্ষ্য নয়। বরং রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত ভারসাম্য রক্ষা করেই চলতে চায়। বরং পুরোনো বন্ধু হিসেবে রাশিয়ার অবদান ভারতের কাছে তুলনাহীন রয়ে গেছে।
দিল্লির সূূত্রগুলো আরও বলেছে যে ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়েও আলোচনা করা হবে পুতিন ও মোদির বৈঠকে। ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে চতুথ্য পারমাণবিক শক্তিচালিত আক্রমণাত্মক সাবমেরিন লিজ দেওয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। এ নিয়ে একটি চুক্তি ২০১৯ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সামগ্রিক এজেন্ডা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা প্রসঙ্গে, সূত্রগুলি বলেছে যে ভারত ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্কের বাইরে যেতে চাইছে। একটি সূত্র বলছে, সামনের রাস্তা যৌথ উন্নয়ন এবং যৌথ প্রযোজনার। আমরা চাই রাশিয়ার কোম্পানিগুলো এখানে এসে বিনিয়োগ করুক এবং উৎপাদিত অস্ত্র বা পণ্য রফতানি হোক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এটি রাশিয়ার জন্য অর্থনৈতিকভাবে কার্যকর হবে কারণ এর অর্থ হল উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। অন্য একটি সূত্র ব্যাখ্যা করে বলেছে, রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগের দিকে ফোকাস করার সময়, এটি অর্থের মাধ্যমে নয়, ট্রান্সফার অফ টেকনোলজি বা প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে হবে।
সূত্র জানিয়েছে যে ভারত সর্বদা মস্কোকে ব্রহ্মোস সুপারসনিক মিসাইল সহ অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি সমস্ত পণ্যের জন্য রয়্যালটি প্রদান করেছে। এর মানে আরও বোঝানো হয়েছে যে ভবিষ্যতে, ভারত যখন তৃতীয় কোনো দেশের কাছে ব্রহ্মোস বিক্রি করবে, তখন রাজস্বের একটি বড় অংশ রাশিয়ার কাছে যাবে। সূত্রগুলি বলেছে যে একে ২০৩ রাইফেল তৈরির চুক্তিতে রয়্যালটিও অন্তর্ভুক্ত ছিল, তবে উভয় পক্ষই এখন একটি ফি নির্ধারণ করেছে, যা প্রতিটি রাইফেলের দাম কমিয়ে এনেছে।