শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি: কী পাচ্ছে বাংলাদেশ, কী হারাতে পারে? ◈ রাতেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা (ভিডিও) ◈ চাপাতি হাতে ব্যাগ ছিনিয়ে পুলিশের সামনেই হেঁটে গেলো ছিনতাইকারী, ভিডিও ভাইরাল ◈ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগার নায়ারা রিফাইনারির ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা ◈ রাতের আকাশে ভেসে উঠলো ‘নাটক কম করো পিও’ (ভিডিও) ◈ জটিল ভয়ানক যে রোগে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ◈ কুড়িগ্রামে চাঁদা দাবি করা জামায়াতের সেই নেতা সাময়িক বহিষ্কার ◈ বড়াইগ্রামে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে দুই বিষয়ে দুই পরীক্ষার্থী ফেল! ◈ টাঙ্গাইলে পুলিশ হেফাজতে বিএনপি নেতার রহস্যজনক মৃত্যু ◈ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ তলিয়ে দেখা দরকার: শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

প্রকাশিত : ২৫ নভেম্বর, ২০২১, ০৩:৪৩ রাত
আপডেট : ২৫ নভেম্বর, ২০২১, ০৩:৪৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডা. লেলিন চৌধুরী: টিকা ও ওষধু প্রয়োগ: করোনার তৃতীয় ঢেউ এলেও মৃত্যু ও অসুস্থতা তীব্র না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি

ডা. লেলিন চৌধুরী
করোনা প্রতিরোধে আমরা টিকা নিই। কিন্তু কেউ সংক্রমিত হয়ে গেলে কি কোনো ব্যবস্থা আছে? আছে। করোনার মুখে খাওয়ার ওষুধ এখন বাজারে, যা মলনুপিরাভির নামে পরিচিত। এই ওষধু বিশে^র বিভিন্ন দেশে উৎপাদন হবে। বাংলাদেশেও তৈরি হবে। করোনার মুখে খাওয়া এই ওষুধ শরীরের ভেতরে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি বা বিভাজিত হওয়ার ক্ষমতাকে প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনবে বা শতকরা পঞ্চাশ শতাংশ কমিয়ে দেবে। ফলে আক্রান্ত রোগীর শরীরে করোনার তীব্রতা ও জটিলতা পঞ্চাশ শতাংশ হ্রাস পাবে। হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে। করোনার তীব্রতা ও মৃত্যু অর্ধেক কমে গেলে স্বস্তির ব্যাপার হবে।

করোনা টিকা নেওয়ার কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষের শরীরে প্রতিরোধক তৈরি হচ্ছে। ফলে সামনে যদি করোনার তৃতীয় ঢেউ আসে বা নতুন করে সংক্রমণের প্রবণতা দেখা দেয়, তাহলে আগের মতো মৃত্যু ও অসুস্থ হবে না মানুষ। চলমান ধারা বজায় থাকলে করোনা মহামারি বছরখানেকের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।

দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে দ্রæত টিকার আওতায় আনতে পারলে খুব ভালো হতো। কিন্তু সেটা চাইলেও টিকা সরবরাহের একটি ব্যাপার আছে। টিকা নিয়ে একধরনের ভ‚-রাজনৈতিক প্রভাবও আছে। সেটি আঞ্চলিক ও বৈশি^ক পর্যায়Ñ দুই জায়গাতেই রয়েছে। সমস্ত বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে টিকা নিয়ে আসার ক্ষেত্রে আমাদের উদ্যোগ অনেকটাই সফল। কিন্তু আমরা যদি প্রথমদিক থেকেই আরও বেশি উদ্যোগী হতে পারতাম, কর্মতৎপর হতে পারতাম ও ভ‚-রাজনৈতিক প্রভাবকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারতাম, তাহলে সম্ভবত যে টাকা খরচ করেছি, তা দিয়ে আরও আগেই বেশি সংখ্যক টিকা পেতে পারতাম। এখন পর্যন্ত টিকা কার্যক্রম যে অবস্থায় আছে, যদি আমরা দ্রæত টিকা সংগ্রহ করে ৮০ শতাংশ মানুষকে দিতে পারি তাহলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা সফল হবো।

চীনের একটি কোম্পানির সঙ্গে টিকা উৎপাদনের যে চুক্তি করেছিলাম আমরা, বলা হয়েছিলো এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই টিকা উৎপাদিত হবে। সেটা হলে দেশীয়ভাবে টিকা উৎপাদন করে প্রতিবেশী বন্ধু দেশগুলোকেও দিয়ে সহযোগিতা করা যেতো। একটি উৎসের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় প্রথমদিকের ঢাকঢোল পেটানোর ফল তেমন পাওয়া যায়নি। পরবর্তী সময়ে অবশ্য অন্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের মধ্য দিয়ে তা অতিক্রম করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, এসব ক্ষেত্রে কথার চেয়েও কাজে গুরুত্ব বেশি দিতে হবে। কারণ করোনা একটি রোগ, এটি হলে মানুষ অসুস্থ হয়, মারা যায়। কথা দিয়ে নয় টিকা ও ওষুধ দিয়ে দূর করতে হবে। ফলে করোনা ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনা দূর করার চেষ্টা করা উচিত।

ইউরোপের কতোগুলো অ্যালার্মিং নিউজ বা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো খবর আমরা পাচ্ছি। অস্ট্রিয়াতে লকডাউন দেওয়া হচ্ছে, জার্মানিতে জরুরি অবস্থা, মস্কোতে কঠোর বিধিনিষেধ কঠোর হয়েছে, এশিয়ার কিছু কিছু দেশে করোনা বাড়ছে। ইরানে বাড়ছে। চীনের একটি অংশে (উত্তর-পূর্বাঞ্চলে) করোনা বেড়ে যাচ্ছে। যেহেতু করোনা একটি বৈশি^ক মহামারি, এ দেশেও বাড়তে পারে। এটাই ধরে নিতে হবে আমাদের।

করোনা প্রতিরোধের দু’টো অংশ প্রতিরোধী কার্যক্রম। এর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও টিকা দেওয়া। অপরটি হলো প্রতিষেধক জাতীয় কার্যক্রম, টিকার ব্যবস্থা করা। দুটো ক্ষেত্রেই আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে। প্রস্তুতিটা যেন যুদ্ধকালীন হয়। যেমন কোনো কারণে আমাদের এখানে করোনা রোগী বেড়ে গেলে তখন যেন দ্রæত চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ দ্রæত বাস্তবায়ন করা যায়। এরকম প্রস্তুতি থাকতে হবে। যেসব দেশে করোনা বেড়ে গেছে সেসব দেশ থেকে লোকজন এদেশে আসতে গেলে বিধিনিষেধের বিষয়টিকে আবার জোর দিতে হবে। যেমন: অস্ট্রিয়া থেকে কেউ বাংলাদেশে আসতে চাইলে তার জন্য দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করতে হবে, টিকা নেওয়ার পরও। এ বিষয়গুলোতে নজর দিতে হবে। কোথাও কারোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করলে, দ্রত যেন সেই জায়গাটায় ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সদা সতর্ক প্রস্তুতি যেন আমাদের থাকে। পরিচিতি: জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়