আবুল কাইয়ুম
লেখক-শিল্পীর স্বাধীনতা সব দেশেই কাগুজে ঘোষণা, কাজীর গরু। এর সম্পূর্ণ রূপায়ন কোনোকালেই বিশে^র কোনো রাষ্ট্রে দেখা যায়নি। অধিকারের ওপর রাষ্ট্রীয় নীতিমাফিক কর্তব্যের পাথর চাপিয়ে লেখকের স্বাধীনতাকে সর্বত্রই ক্ষুণœ করা হয়েছে। পুঁজিতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র নির্বিশেষে একই অবস্থা, একটি চাপানো ছকের মধ্যে থেকেই লেখককে তাঁর লেখনী ঘোরাতে-ফেরাতে বাধ্য করা হয়েছে। ছক ডিঙ্গোলেই নির্বাসন, জেলজুলুম কিংবা কতল। রুশ বিপ্লবের সহায়ক হয়েও বন্ধু লেনিন ও বলশেভিকদের সমালোচনা করার কারণে ম্যাক্সিম গর্কিকে ১৯২১ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত ইতালিতে নির্বাসিত অবস্থায় থাকতে হয়েছিলো।
পুঁজিবাদবিরোধী ভ‚মিকা ও অর্থব্যবস্থা সম্পর্কে প্রগতিশীল মতামত দেওয়ার কারণে এজরা পাউন্ডকে ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত জেল ও পাগলা গারদে পুরে রাখা হয়। আমি শুধু দুই বিপরীত সমাজব্যবস্থা থেকে দুটি উদাহরণ উপস্থিত করলাম। সর্বকালে বিশ্বব্যাপী বিরুদ্ধবাদী ও ভিন্ন মতাবলম্বী লেখক-শিল্পী নিবর্তন ও নিধনের ইতিহাস থেকে আর কোনো দৃষ্টান্ত নাইবা তুললাম। যা ইচ্ছা লেখা যাবে না- সর্বত্র এই ঘোষিত ও অঘোষিত সেন্সর। এভাবেই চলছে আজন্মকাল। ফলস্বরূপ, সমর্পণ বা তাঁবেদারির নেকাবে ঢাকা পড়ে গেছে অধিকাংশ লেখকের মুখাববয়। এর মাঝেও কোনো কিছু পরোয়া না করে স্বাধীন চিন্তা নিয়ে বীরদর্পে এগিয়ে যান কিছু কিছু কবি-সাহিত্যিক, তাঁরাই প্রকৃত কলমসৈনিক। ফেসবুক থেকে