কালের কণ্ঠ : গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এলাকাভিত্তিক প্রায় সাড়ে তিন হাজার মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তাদের বেশির ভাগ ইয়াবা কারবারে যুক্ত। নানা কৌশলে তারা রাজধানী ও রাজধানীর উপকণ্ঠে সক্রিয় রয়েছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন রাজধানীতে বিক্রি হয় ১৫ লাখ ইয়াবা।
সম্প্রতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদন জরিপে বলা হয়েছে, এই মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করা না গেলে ভবিষ্যতে তাদের সহযোগী আরো বাড়বে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৩০ ধরনের মাদকের মধ্যে বেশি সেবন করা হয় ইয়াবা। সূত্র মতে, দেশে প্রতিদিন প্রায় ৭০ লাখ ইয়াবা বিক্রি হয়। এর মধ্যে রাজধানীতে বিক্রি হয় অন্তত ১৫ লাখ। প্রতিটি ইয়াবার দাম ৩০০ টাকা হলে ৭০ লাখ ইয়াবার মূল্য দাঁড়ায় ২১০ কোটি টাকা।
রাজধানীতে সর্বাধিক ইয়াবা বিক্রি করে মোহাম্মদপুর ও মিরপুরের জেনেভা ক্যাম্প কেন্দ্রিক মাদক কারবারিরা। এর বাইরে সবুজবাগের বাসাবো এলাকা, খিলগাঁও, কমলাপুর, যাত্রাবাড়ী, তেজগাঁও ও বিমানবন্দর রেলওয়ে বস্তিসহ পুরান ঢাকার আরো কয়েকটি এলাকায়। সম্প্রতি সরেজমিনে এসব এলাকা ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে মোহাম্মদপুরের গজনবী রোড, বাবর রোড, শাহজাহান রোড, হুমায়ুন রোডে গিয়ে দেখা গেছে, চারটি রোডেই রয়েছে পুলিশের তল্লাশিচৌকি। মাঝখানের ক্যাম্পে দিনরাত চলছে মাদক বেচাকেনা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্তত ২০ জনের নিয়ন্ত্রণে মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে চলে মাদক কারবার। আর তেজগাঁও রেল বস্তি, বনানীর কড়াইল বস্তি, সবুজবাগের ওহাব কলোনি, কামরাঙ্গীর চর, মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে মাদক বাণিজ্য চলে অর্ধশতাধিক মাদক কারবারির নিয়ন্ত্রণে।
সম্প্রতি পল্লবী বিহারি ক্যাম্প এলাকায় বেশ কয়েকজন মাদক কারবারির সঙ্গে কথা হয়। তাদের একজন কামরান। তিনি জানান, রাজধানীর বিহারি ক্যাম্পগুলোয় অন্তত ১৫টি গ্রুপ রয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে মাদক কারবারিদের। স্থানীয় ওয়ার্ড পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কিছু সদস্যও তাদের মাদক কারবারে সহযোগিতা করেন। কামরান আরো জানান, মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারের এত পদক্ষেপ ভেস্তে যায় মূলত প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে।
রাজধানীর বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা অবাঙালিদের নিয়ে কাজ করে স্টান্ডেড পাকিস্তানিজ জেনারেল রিপাট্রিয়েশনস (এসপিজিআরসি)। সংগঠনটির নেতারা জানান, পুরো দেশে ৭০টি ক্যাম্পেই কম-বেশি মাদকের প্রভাব রয়েছে। এক ক্যাম্পের মাদক কারবারিদের সঙ্গে অন্য ক্যাম্পের মাদক কারবারিদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। এভাবে মাদক ছড়িয়ে পড়ে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়।
এসপিজিআরসির সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী বলেন, ‘ক্যাম্পে বসবাসকারীরা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের অনেকে লেখাপড়া জানে না। কেউ পড়ালেখা করলেও কর্মসংস্থানের তেমন সুযোগ নই।
আপনার মতামত লিখুন :