ইকবাল আনোয়ার
আজ ছেষট্টি-সাতষট্টি বছর বয়সে আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, স্কুলের বা ধরি কলেজেরই, লেখাপড়া আমার কেমন লাগতো? কেন সেসব পড়তাম? আমি নিজেকে ফাঁকি না দিয়ে বলবো, পরীক্ষায় পাস করাই আমার পড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিলো। ছড়া, কবিতা, গল্প বাদে অন্য কিছু মনে শতভাগ আনন্দ আনতো না! জানার আগ্রহ জন্মাতো না। অঙ্ক, বিজ্ঞানে ভালো ছিলাম বটে, তবে অঙ্কের মাধুর্য বা ফিজিক্সের মতো বিষয়ে আমার মনে আলো জ্বলতো না। বরং কিছু বাইরের বই, আমাকে টানতো! শিক্ষায় প্রকৃত মজা বা আনন্দ না পেয়েই পড়েছি। মেডিকেলে পড়ার সময় মানুষের দেহ-মনের রহস্য আমায় টানতো। কিন্তু তখন আমি এক্সট্রা একাডেমিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ি।
তবে মেডিকেলে তো না জেনে না পড়ে পাস করা যায় না। তা করেছি। আমি বরং পড়তে গিয়ে তখন গভীরে জানতে রাত কাটিয়ে দিয়েছি, যা পরীক্ষায় আসবে না। লেখাপড়ায় আনন্দ না থাকলে, জানতে পারার মজা অনুভুত না হলে তা ঘাস খাওয়ার মতো হয়। এখন যেমন জানতে চাওয়ার আনন্দে পাঠ করি, সেটা স্কুলে যদি জাগতো মনে, তবে এখন আমাকে অনেক মৌলিক পড়া শুরু করতে হতো না। আমার মতো সবাই নয়। নিশ্চয়ই অনেকেই স্কুল জীবনে মনের আনন্দে পড়েছেন। আমি এখন শিশুদের ‘পড়াই’ না, বরং তার মনে এমন আলো জ্বালাতে চাই, যেন সে নিজ থেকে তা জানতে, পড়তে আগ্রহী হয়। জানার জন্য ছাত্রের মনে ক্ষুধা তৈরি করা সুশিক্ষকের কাজ। লেখক : চিকিৎসক