আফরোজা সরকার: [২] তাদের একজনের কাছ থেকে হিন্দুদের বাড়ি থেকে লুট হওয়া মাছ ধরার একটি জাল জব্দ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র।
[৩] গ্রেফতাররা হলেন- পলাশ হোসেন (৩৫), শাফিকুর রহমান (২৬) ও আশিকুর রহমান (২৪)। সোমবার রাতে পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের একজনের কাছে মাছ শিকারের একটি ঝাকি জাল পাওয়া যায়। গ্রেফতার সবাই হিন্দুপল্লীদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের মামলার আসামি। তাদের আজ মঙ্গলবার যে কোনো সময় আদালতে নেয়া হবে।
[৪] এদিকে রংপুর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (পীরগঞ্জ সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান জানান, বড় করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামে সহিংসতার ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনটি এবং হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনায় একটি মামলা রয়েছে। এখন পর্যন্ত দু'দফায় ৫০ জন আসামি রিমান্ডের আওতায় এসেছে। নতুন তিনজনসহ এখন পর্যন্ত ৬৯ জন গ্রেফতার হয়েছেন। প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
[৫] এদিকে গ্রেফতারদের মধ্যে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়া ও সহিংসতার ঘটনা উসকে দেওয়ার অন্যতম হোতা পরিতোষ সরকার, উজ্জ্বল হোসেন, বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা সৈকত মণ্ডল ও মসজিদের ইমাম রবিউল ইসলামসহ অনেকেই রয়েছেন। তারা আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নিজেদের জড়িত থাকার দায় স্বীকার করেছেন।
[৬] উল্লেখ্য, গত রোববার (১৭ অক্টোবর) রাতে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে উগ্রবাদীরা। এ ঘটনায় গ্রামটির ১৫টি পরিবারের ২১টি বাড়ির সবকিছু আগুনে পুড়ে গেছে।
[৭] সব মিলিয়ে অন্তত ৫০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। হামলাকারীরা গরু-ছাগল, অলংকার, নগদ টাকাও নিয়ে গেছেন বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের। এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানায় করা চারটি মামলায় ৬৯ জন গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রথম দফায় ৩৭ জনকে তিন দিনের রিমান্ড পেয়েছিল পুলিশ। বর্তমানে আরও ১৩ আসামির রিমান্ড চলছে।