আশরাফুল আলম খোকন: হিন্দু ধর্মের ভাইবোনদের ওপর হামলা নিয়ে এখনো টিআইবি, সিপিডি ও ৬১ বিশিষ্ট নাগরিকের কোনো বিবৃতি দেখলাম না’তো। যেখানে ফেসবুক গুজববাজদের কিছু বললেও তারা দেশ জাতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে যান। আরেকটা কথা, এটা একান্ত আমার ব্যক্তিগত অভিমত। যতোদিন না আমরা ‘সংখ্যালঘু’ শব্দ থেকে বের হয়ে আসতে পারবো ততোদিন এই সমস্যার সমাধান হবে না। ৫৬ হাজার বর্গমাইল আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। সংখ্যালঘু কোত্থেকে আসলো? অনেক দায়িত্ববান মেধাবী মানুষকেও অহরহ এই শব্দটা বলতে শুনি।
ধর্মের ভিত্তিতে বাংলাদেশের জন্ম হয়নি। হয়েছে বাঙালি জাতিসত্তার ভিত্তিতে। সংখ্যালঘু শব্দটা এসেছে ধর্মীয় বিভাজন থেকে। এই ধর্মীয় তত্ত¡ যে ভুল তা ১৯৭১ সালেই প্রমাণিত হয়েছে। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ সালে যে তত্ত¡ আবিষ্কার করে ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্র ভাগ করেছিলেন। যারা ধর্মকে একটা রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভ মনে করেন তারা ধর্মীয় রাষ্ট্রগুলোতে চলে গেলেই পারেন। অবশ্য পারবেন না, কারণ পৃথিবীতে ধর্মীয় কোনো রাষ্ট্র নেই। আমরা যারা বাঙালি জাতিসত্তায় বিশ্বাস করি তাদের জন্যই বাংলাদেশ। এই মূল নীতি নিয়েই লাল সবুজের এই দেশটির জন্ম।
[২] সব সময়ের বাচ্চাদের অভ্যাসগুলো একই রকম। তারা ঘুমাতে চায় না, খেতে চায় না। এই নিয়ে মায়েদের যন্ত্রণা অনেক। অধিকাংশ সময়ই গল্প বলে বলে খাওয়াতে হয় আর ঘুম পাড়াতে হয়। গল্পগুলো অধিকাংশই থাকতো দৈত্য দানবের গল্প। যাতে ভয়ে ঘুমিয়ে যায় ও তাড়াতাড়ি প্যারা দেওয়া ছাড়া খেয়ে ফেলে। আমার ক্ষেত্রেও আমার মা তাই করেছেন। আমার সন্তানদের ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। অনেকের জীবনের অনেক এডভেঞ্চার থাকে। অনেকে অনেক কিছু জীবনে হতে চায়, কেউ নায়ক হতে চায় কিংবা রোমাঞ্চকর খলনায়কও হতে চায় অনেকে। কিন্তু কেউ দৈত্য দানব হতে চায় না। কারণ ছোট সময় থেকেই জেনে আসছে তারা মানুষের রক্ত খায়।
ওই যুগের রূপকথার দৈত্যরাই হচ্ছে এই যুগের ‘ধর্মান্ধ’। পৃথিবীজুড়ে তারা শুধু ধ্বংসই করতে জানে, কিছু গড়তে জানে না। তারা মসজিদ ভাঙে, তারা মন্দির ভাঙে, তারা গির্জা ভাঙে, তারা প্যাগোডাও ভাঙে।
তারা সবাই বক ধার্মিক ও ধর্মান্ধ। সারা পৃথিবীতে অশান্তির মূলে তারা। তাদের প্রতিহত করতে পারলেই পৃথিবীর অশান্তি অর্ধেক কমে যাবে। অনেকগুলো দেশ বেঁচে যাবে। দৈত্যের গল্পের মতো বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের ধর্মান্ধদের গল্প শুনতে পারে। যাতে, আজকের শিশু বড় হয়ে মসজিদ, মন্দির না ভাঙে।