আনোয়ার হোসেন: [২] ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে কেরোসিনের আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত গৃহবধূ মৌসুমি আকতার (১৯) ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার মৃত্যুর পর মরদেহ ও ১ মাস বয়সী পুত্র সন্তানকে হাসপাতালে রেখেই পালিয়েছে স্বামী ও তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
[৩] গৃহবধূর মামা ফারাজ উদ্দীন ও স্থানীয় চেয়ারম্যান আকালু (ডংগা) শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
[৪] গৃহবধূর মামা ফারাজ উদ্দীন জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোররাতে ভাগনি মৌসুমি আকতার মারা যায়। মৃত্যুর খবর শুনে মরদেহ ও ১ মাস বয়সী পুত্র সন্তানকে রেখে স্বামী সাজেদুর রহমান ও শ্বশুর জাহাঙ্গীর আলম হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়েছে। ভাগনির সঙ্গে থাকা ৫০ বছর বয়সী নানি আফিয়া খাতুন ঢামেকের কাউন্টারে বসে নিরুপায় শিশুটি নিয়ে কান্নাকাটি করছে।
[৫] ফারাজ উদ্দীন আরও জানান, গৃহবধূর পরিবারের লোকজন না থাকায় ময়নাতদন্ত ও মরদেহ হস্তান্তর হয়নি। শনিবার ঢাকায় তাঁর বাবা পৌঁছালে ময়নাতদন্ত করে মরদেহ হস্তান্তর করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
[৬] এর আগে গত সোমবার ভোররাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের লালাপুর গ্রামে গৃহবধূর স্বামীর বাড়িতে গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা করেছিল স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন। এমন অভিযোগ করেছিলেন গৃহবধূর বাবা সমির উদ্দীন।
[৭] এ ঘটনার পর গৃহবধূকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে রংপুরে মেডিকেলে রেফার্ড করে। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তির জন্য রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
[৮] মেয়ের বাবা সমির উদ্দীন ঢাকায় যাওয়ার পূর্বে জানান, আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি জামাই ও তাঁর পরিবারের লোকজনের বিচার চাই।
[৯] বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহাবুব আলম গত সোমবার বলেছিলেন, কেরোসিনের আগুনে গৃহবধূর শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় তাঁর জ্ঞান ছিল না।
[১০] মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল হক প্রধান বলেন, ঘটনার পর আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্পাদনা: হ্যাপি