আবদুল ওহাব: [২] বগুড়া শাজাহানপুরে এক নারী তার স্বামীর জায়গা-জমি লিখে নেওয়ার জন্য সন্তানকে দিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের ভাড়া করে তার নিজ পিতাকে অপহরণ ও গুম করার সময় খালেদ মাহমুদ (২৫) নামে ওই সন্তান সহ ৭ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অপহৃত ওই বাবার নাম মোস্তফা রাশেদ (৫০) এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য। সে বগুড়া সোনাতলা উপজেলার পোড়াপাইকার গ্রামের মৃত আবেদ আলীর ছেলে এবং শাজাহানপুরের মাঝিড়া এলাকার নিজ বাসায় বসবাস করছিল।
[৩] মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) এ ঘটনা ঘটে এবং শাজাহানপুর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-১। খালিদ মাহমুদ পিতা মোস্তফা রাশেদ গ্রাম পোড়াপাইকার থানা সোনাতলা জেলা বগুড়া, ২। মোসাদ্দেকুর ( রহমান (৩০) পিতা আবদুল মজিদ গ্রাম বালিয়াপুকুর থানা বোয়ালিয়া জেলা রাজশাহী, ৩। অলি (৪২) পিতামৃত আবদুর রহিম গ্রাম মুন্সিপাড়া থানা কাশিয়াডাংগা জেলঅ রাজশাহী, ৪। আবদুস সাত্তার (৩৬) পিতা আবুল কাশেম গ্রাম কয়েলদাড়া বিলপাড়া থানা বোয়ালিয়া জেলঅ রাজশাহী, ৫। নোমান আরাফাত (২৫) পিতা আরিফুল ইসলাম গ্রাম পৈলানপুর, ৬। আজিজুর রহমান সুমন (৪৪) পিতা শহীদ আলী গ্রাম ছাতিয়ানি,৭। মানিক শেখ (৩২) পিতা রেহেজ শেখ গ্রাম লস্করপুর সকলের থানা ও জেলা পাবনা সদর।
[৪] অপহৃত বাবা মোস্তফা রাশেদ জানান, সে স্ত্রী সন্তান সহ সোনাতলায় তার গ্রামের বাড়ীতে বসবাস করতো। কিছুদিন আগে সরকারী চাকুরী থেকে অবসর নেওয়ার পর স্ত্রী ও সন্তান তার জায়গা-জমি তাদের নামে লিখে নেয়ার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু এতে রাজি না হওয়ায় নানাভাবে দীর্ঘদিন স্ত্রী ও সন্তান তাকে নির্যাতন করতে থাকে। এতে অতিষ্ট হয়ে সে শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়াতে তার আরেক বাসায় একা বসবাস করছিল।
[৫] এরই একপর্যায়ে কুট কৌশলে সোমবার গভীর রাতে অজ্ঞাতনামা এক মোবাইল ফোন থেকে“ বাংলা লিংক মোবাইল কোম্পানী থেকে পাঠানো একটা গিফট বাসায় পৌছে দেওয়ার জন্য বাসার লোকেশন জানতে চায়। সরল বিশ্বাসে সে বাসার লোকেশন বলে দিলে কিছুক্ষন পর ছেলে খালেদ মাহমুদ সহ একদল দুষ্কৃতিকারী বাসায় গিয়ে পুলিশ পরিচয় দিয়ে হাত-পা রশি দিয়ে বেধে মারধর করতে করতে মাইক্রোবাসে উঠায়ে অপহরণ করে গুম করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়।
[৬] শাজাহানপুর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন জানায়, সংবাদ পেয়ে তিনি নিজে সংগীয় ফোর্স সাথে নিয়ে মাইক্রোবাসটিকে ধাওয়া করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। এসময় মাইক্রোবাসের মধ্যে হাত-পা মুখ বেধে পিতা মোস্তফা রাশেদকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কারন জানতে চাইলে সন্তান খালিদ মাহমুদ ও দুষ্কৃতিকারীরা জানায়, তার বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসময় ডাক্তারী অনুমতি পত্র ও থানাকে অবগত করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে ও রহস্যের মুখোশ প্রকাশ হয়।
[৭] এরপর সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজনের নিকট গিয়ে এ বিষয়ে পুলিশ জানতে চাইলে তারা বলেন, খালিদ রাশেদ সম্পুর্ণ সুস্থ। তিনি পাচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন এবং সকলের সাথে সৌহার্দ্যপুর্ণভাবে বসবাস করেন। এছাড়াও তার জায়গা-জমি ও অর্থ সম্পদ লিখে নেওয়ার কুট কৌশলে তাকে অপহরণ ও গুম করার কথা স্থানীয়রা বর্ণনা করেন। শুধু তাই নয়, তার স্ত্রী ও সন্তানের অপকর্মের কথা পুলিশকে জানায়। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে এ ঘটনায় শাজাহানপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়েরের পর আসামীদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।