শিরোনাম
◈ আবারও মে‌সির জোড়া গোলে ইন্টার মায়ামির জয় ◈ এখন থেকে আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নাম থাকবে না: জ্বালানি উপদেষ্টা ◈ ‘তুমি কেন ফুয়েল কেটে দিলে?’ ভারতীয় বিমান বিধ্বস্তের আগে পাইলটদের শেষ ককপিট ভয়েস রেকর্ডিং ◈ দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসীদের জন্য সুখবর: মৃত্যু হলে লাশ দেশে পাঠাবে সরকার, ক্ষতিপূরণ মিলবে বীমার আওতায় (ভিডিও) ◈ বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হতে যাচ্ছে ভারত: পিউ রিসার্চ ◈ বেপরোয়া বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ছয় মাসে নিহত ৪৩ ◈ স্প‌্যা‌নিশ ক্যাবরেরাই থাক‌ছেন বাংলা‌দেশ ফুটবল দ‌লের কোচ ◈ সন্ধ‌্যায় নেপালের বিরু‌দ্ধে লড়াই‌য়ে নাম‌ছে বাংলা‌দে‌শের মে‌য়েরা ◈ ঢাকায় হবে এশিয়া কাপের সভা, ভারত অংশ নে‌বে না ◈ এবার যে কারণে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলেন ড. ফয়জুল হক

প্রকাশিত : ০৪ অক্টোবর, ২০২১, ০৪:৪৭ সকাল
আপডেট : ০৪ অক্টোবর, ২০২১, ০৪:৪৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফ্রি ভিপিএনে চলছে নিষিদ্ধ গেমস ও পর্নো সাইট, মোবাইল-ল্যাপটপ নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে হ্যাকারের হাতে

নিউজ ডেস্ক: ইন্টারনেটের নিষিদ্ধ জগতে বিচরণ করতে হু হু করে বাড়ছে ফ্রি ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) ব্যবহার। কখনো পর্নো সাইটে ঢু মারতে, কখনো নিষিদ্ধ ভার্চুয়াল গেম বা অনলাইনে জুয়া খেলতে, কখনো আবার ডিজিটাল প্রতারণা করতে কিশোর থেকে যুবক, এমনকি মধ্যবয়সীরা হাতের মোবাইল বা ল্যাপটপে ইনস্টল করে নিচ্ছেন বিনামূল্যের ভিপিএন সফটওয়্যার। আর নিজের অজান্তেই ডিভাইসটির নিয়ন্ত্রণ তুলে দিচ্ছেন হাজার মাইল দূরে থাকা অন্য কারও হাতে। চুরি হয়ে যাচ্ছে ওই ব্যক্তির গোপনীয় অনেক ব্যক্তিগত তথ্য, পাসওয়ার্ড, ব্যাংকিং লেনদেন, ক্রেডিট কার্ড বা স্পর্শকাতর অনেক তথ্য। বাংলাদেশ প্রতিদিন

আইসিআইআর.ওআরজি-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, পরীক্ষা করে ২৮৩টি ফ্রি ভিপিএনের ৭২ শতাংশেই ট্র্যাকার পাওয়া গেছে, যা ব্যবহারকারীর অবস্থান ও বিভিন্ন কর্মকান্ড ট্র্যাক করে। একই গবেষণায় দেখা গেছে, গুগল প্লে স্টোরের ৩৮ ভাগ ফ্রি ভিপিএন অ্যাপ্লিকেশনে ম্যালওয়্যার রয়েছে, যা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্যকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এর মধ্যে সুপার ভিপিএনসহ কিছু ভিপিএনের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর ডিভাইস থেকে তথ্য চুরির অভিযোগ মিলেছে। সাইবার সিকিউরিটি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ম্যাকাফির ভাইস প্রেসিডেন্ট (কনজুমার ক্লাউড সেগমেন্ট) প্রভাত লাল গত মার্চে এক নিবন্ধে লিখেছেন, সম্প্রতি একটি হ্যাকিং ফোরামে তিনটি ডেটাবেস ফাঁস করা হয়, যেখানে ২ কোটি ১০ লাখ ব্যবহারকারীর নাম, ই-মেইল ঠিকানা, লেনদেন তথ্য, ডিভাইসের তথ্য এবং অবস্থানগত তথ্য রয়েছে। তিনটি ভিন্ন অ্যান্ড্রয়েড ভিপিএন পরিষেবা থেকে তথ্যগুলো চুরি করা হয়েছিল। একই সঙ্গে একটি সুনির্দিষ্ট ফ্রি ভিপিএন পরিষেবার মাধ্যমে গত বছর ১৫ কোটি মানুষের ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি হয়েছে বলে গবেষণায় আশঙ্কা করা হয়েছে।

এদিকে নতুন প্রজন্মের বিপথে যাওয়া রুখতে সরকার গত চার বছরে ২২ হাজারের বেশি পর্নো সাইট ও ৬ হাজারের বেশি ভুয়া ওয়েবসাইট বন্ধ করলেও ভিপিএন ব্যবহার করে দেদার চলছে এসব ওয়েবসাইটে বিচরণ। সম্প্রতি পাবজি ও ফ্রি ফায়ার গেম নিষিদ্ধ করা হলেও তাও বন্ধ হয়নি। তবে ফ্রি ভিপিএনে ইন্টারনেট গতি কম থাকায় এসব নিষিদ্ধ গেম খেলার প্রবণতা কমেছে। তবে অনেকে পেইড ভিপিএন দিয়ে খেলছে। গত এক সপ্তাহে রাজধানীর ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী অন্তত ২০ জনের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই মিলেছে। এ ব্যাপারে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের (আইএসপিএবি) সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পর্নো সাইট ও গেমগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ভিপিএন ব্যবহার করে কেউ নিষিদ্ধ সাইটে ঢুকলে আমাদের কিছু করার নেই।

রাজধানীর একটি নামকরা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র জুবায়েরের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া যায় ভিপিএন ব্যবহারের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র। করোনায় স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে ঝুঁকে পড়েন মোবাইলে ফ্রি ফায়ার গেমে। সরকার গেমটি সাময়িক নিষিদ্ধ করলে সপ্তাহখানেক বন্ধ থাকে তার খেলা। পরে বন্ধুর কাছ থেকে মিলে যায় সমাধান। গুগল প্লে স্টোর থেকে ফ্রি ভিপিএন ডাউনলোড করে ফের খেলা শুরু করেন। দিনের ৬-৭ ঘণ্টা কেটে যায় তার গেম খেলে। কোনো ভিপিএনে স্পিড ভালো পাওয়া যায় সেই পরামর্শও রিপোর্টারকে দেন জুবায়ের। একই সঙ্গে জানান, তার অধিকাংশ বন্ধুই ভিপিএন ব্যবহার করে গেম খেলে। এ ব্যাপারে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা ভালোর জন্য খারাপ ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ করেছি। ভিপিএন দিয়ে কেউ বন্ধ সাইটগুলোয় ঢুকলে কী করার আছে। কেউ নিজের ক্ষতি করতে চাইলে তা ঠেকানো সম্ভব না।

চাইলেই আমরা ভিপিএন, ফেসবুক, ইউটিউব সব বন্ধ করে দিতে পারি না। এতে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে অর্থ আয় করছে, কেউ খারাপ কাজে ব্যবহার করছে। যে খারাপ, সে একটা ফাঁক বের করবেই। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সতর্ক হতে হবে। এদিকে তথ্য-প্রযুক্তিবিদ জয়দেব মৃধা বলেন, করোনা মহামারীকালে ফ্রি ভিপিএন ব্যবহার খুব দ্রুত বেড়েছে, যা এগুলোর ডাউনলোড সংখ্যা দেখলে বোঝা যায়। ঘরবন্দী জীবনে সময় পার করতে অনেকেই হয়তো ভিপিএন দিয়ে অনলাইনে নিষিদ্ধ বিষয়বস্তুর দিকে ঝুঁকেছে। যদিও পেইড (অর্থ দিয়ে কেনা) ভিপিএন ব্যবহারকারীর তথ্যের নিরাপত্তা আরও জোরদার করে। তবে বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষই ফ্রি ভিপিএন ব্যবহার করে। এতে নিজের অজান্তেই ব্যক্তিগত তথ্য সাইবার হামলাকারীদের কাছে উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। ১৫০টি ভিপিএন অ্যাপ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এর মধ্যে ৯৯টি ইনস্টলের সময় অপ্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য অনুমতি চায়। ৩৮টি ভিপিএন অবস্থানগত তথ্য, আর ৫৭টি ব্যক্তিগত তথ্য চায়। এ ছাড়া ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, বার্তা পড়ার অনুমতিও চায় এসব অ্যাপ। ভিপিএন অ্যাপের এসব তথ্য চাওয়া সন্দেহজনক। গুগল প্লে স্টোরের ১৫০টি জনপ্রিয় ভিপিএনের ২৫ শতাংশের বেশি অ্যাপের বিরুদ্ধে তথ্য বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়