প্রভাষ আমিন : বাংলাদেশ যতো ডিজিটাল হচ্ছে, দুর্ভোগ ততো কমছে। হাতের স্মার্ট ফোনেই সেরে ফেলা যায় রাজ্যের কাজ। যেমন পাসপোর্টের আবেদন এখন পুরোটাই অনলাইনে। অ্যাপয়েন্টমেন্টও অনলাইনে মেলে। একদম সুনির্দিষ্ট-১৭ অক্টোবর সকাল ১০টা ৩০ মিনিট। তারপরও সেখানে দালালদের দৌরাত্ম্য কমেনি। দালালদের এখন কী কাজ জানি না। সবকিছু অনলাইনে হলে কিন্তু দুর্ভোগ ফুরিয়েই যেতো। কিন্তু দুর্ভোগবিহীন পাসপোর্ট যেন এখনও দূর কল্পনা। আবেদন অনলাইনে হলেও টাকা জমা দিতে হবে অফলাইনে, মানে সশরীরে ব্যাংকে গিয়ে ‘এ চালান’ নামে এক বিদঘুটে ফরম পূরণ করে। আপনি এখন ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিংএ দুনিয়ার সবকিছু কিনতে পারবেন ঘরে বসেই, সব বিল দিতে পারবেন; শুধু পাসপোর্টের ফি ছাড়া। পাসপোর্ট রিনিউ করতে আজ সকালে আগারগাও পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দালালদের আনাগানো তো দেখলামই, পোহালাম ডিজিটাল দুর্ভোগও।
সব কাজ পাসপোর্ট অফিসে, টাকা জমা দিতে হবে ব্যাংকে। দৌঁড়ালাম ঢাকা ব্যাংকের বুথে। দুটি কাউন্টারের ছোট্ট বুথ। সামনে খোলা আকাশের নিচে লম্বা লাইন। আর সেই লাইন ক্রমশ লম্বা হতে থাকে। কারণ পেছনের লাইন লম্বা হলেও সামনের লাইন আগায় না। টাকা নিতে হয় এনআইডি সার্ভারের সঙ্গে মিলিয়ে। হুটহাট সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। একেকজনের টাকা জমা নিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লেগে যায়। কাঠফাটা রোদ্দুরে ঘণ্টাদুয়েক দাড়িয়ে থেকে হাল ছেড়ে দিলাম। টাকা জমা দিতে পারলেও আজ হয়তো অফিস টাইম ধরা যেতো না। আর এই রোদ্দুরে আরো কয়েক ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকলে নিজের অফিসে নয়, হাসপাতালে যেতে হতো। তাই রণে ভঙ্গ দিলাম। অফিসে ফিরে ওয়ান ব্যাংকের কারওয়ানবাজার ব্রাঞ্চে টাকা জমা দিয়েছি। কাল আবার যেতে হবে পাসপোর্ট অফিসে। সবকিছু অনলাইনে করে, পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়াটা কেন অফলাইনে? জানি না। সরকার চাইলে এই দুর্ভোগ থেকে মানুষকে সহজেই মুক্তি দিতে পারে। লেখক : হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ