মাসুদ আলম, সুজন কৈরী: [২] রাজধানীর মালিবাগ থেকে ছেড়ে যাওয়া সাতক্ষীরাগামী সোহাগ পরিবহনের একটি বাসের চালকের সিটের নিচ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা মূল্যের ৫৮টি স্বর্ণবার উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এ ঘটনায় বাস চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারকে আটক করা হয়েছে।
[৩] বুধবার রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ বলেন, গোয়েন্দা তথ্যে মালিবাগ থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্য ছেড়ে যাওয়া সোহাগ পরিবহনের একটি বাসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণবার জব্দ করা হয়েছে। গাড়িটিতে দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশির পর বারগুলো চালকের আসনের নিচে বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায়। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যার ওজন ৬ দশমিক ৭২৮ কেজি। এ ঘটনায় আটক করা হয়ে গাড়িচালক শাহাদাৎ হোসেন, চালকের সহকারী ইব্রাহিম ও গাড়ির সুপারভাইজার তাইকুল ইসলামকে।
[৪] এসব স্বর্ণ বিদেশ থেকে এনে বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে পাশের দেশে পাচার করা হচ্ছিলো উল্লেখ করে ড. মো. আব্দুর রউফ বলেন, দুবাই থেকে বিমানে করে অবৈধ স্বর্ণবার দেশে আনা হয়। পরে সেগুলো বাসে করে ভারতে পাচারের জন্য সাতক্ষীরা সীমান্তে নেওয়া হচ্ছিলো। তবে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের তৎপরতায় রাজধানীতেই আটকে দেওয়া হয় চালানটি।
[৫] এই স্বর্ণগুলোর আসল মালিক কে, সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সংস্থাটির মহাপরিচালক বলেন, বিষয়টি জানতে তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে আরও জানতে কাস্টমস আইনে মামলা দায়েরের পাশাপাশি ফৌজদারি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। প্রক্রিয়া শেষ হলে আমরা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবো, তখন তারা তদন্ত করে বের করবে।
[৬] অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই স্বর্ণবারগুলো দীর্ঘদিন ধরে মজুদ করা হচ্ছিলো। আমাদের কাছে উদ্ধার হওয়া সোনার মধ্যে ৮ কোম্পানির স্বর্ণবার রয়েছে। আমাদের দেশে আসা অধিকাংশ স্বর্ণ পাশের দেশে পাচার হয়ে যায়। তাই কাস্টমস গোয়েন্দাদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও পাচারকারীদের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং অনুমতির প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি।
[৭] শুল্ক গোয়েন্দা জানায়, মঙ্গলবার রাতে সাতক্ষীরাগামী সোহাগ পরিবহনের বাসটিতে সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. ইফতেখার আলম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে অভিযানটি চালানো হয়। গাড়িটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সংলগ্ন ট্রাফিক সিগনাল এলাকায় পৌঁছালে শুল্ক গোয়েন্দা টিম গাড়িতে উঠে তল্লাশি করে। দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি শেষে বাসচালকের সিটের নিচে সুকৌশলে লুকানো অবস্থায় ৫৮টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। সোহাগ পরিবহনের বাসটির নম্বর- ঢাকা মেট্র্রো-ব ১৪-৯৫১৪।
[৮] সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, এ নিয়ে গত দুই মাসে ১০ কেজি ৯৩১ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিপ্ততর। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৭৪ কেজি ৪৯ গ্রাম, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮০ কেজি ৩৫ গ্রাম ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৬৯ কেজি ২৫ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।