ফয়সাল চৌধুরী: [২] পাবনা মহাসড়কে বেহাল দশা হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এটি উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ৩২ জেলার প্রবেশদ্বার গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। দীর্ঘদিন ধরে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে শত শত যাত্রীবাহী পরিবহণ ও মালবাহী পরিবহণে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
[৩] কুষ্টিয়া শহরের ত্রিমোহনী এলাকা থেকে ভেড়ামারা উপজেলার বারোমাইল পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তায় ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খারাপ হয়েছে তালবাড়িয়া, রানাখড়িয়া ও বহলবাড়িয়া এলাকায়। এই এলাকায় বালুর ঘাট রয়েছে। রানাখড়িয়া এলাকায় প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ পিচ ও পাথর উঠে সেখানে কাদা হয়ে আছে। তালবাড়িয়া বালুমহাল থেকে প্রতিদিন কয়েক শত ড্রাম ট্রাক ও অন্যান্য ট্রাক ভেজা বালু নিয়ে যাতায়াত করে। এতে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বালুবাহী ভারী ট্রাক চলায় সড়কটি আরও বেহাল হয়েছে। সেখানে প্রায়ই প্রতিদিনই ভারী যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে। তখন যান চলাচল স্বাভাবিক হতে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
[৪] প্রতিদিন বালুবোঝাই ভারী ট্রাক এখান দিয়ে মহাসড়কে উঠছে। ড্রাম ট্রাকে অতিরিক্ত লোড এর কারণে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে এই সড়কটি বারবার বেহাল দশা প্রণীত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি বালু, পানি ও মাটির সড়কের রূপ নিয়েছ। এখন জনসাধারণকে এর খেসারত দিতে হচ্ছে। ।সড়কের পিচ ও পাথর উঠে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কটি এখন মরণ ফাঁদ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইট-বালু ফেলে চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য জরুরি মেরামতের কাজ করলেও এর কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
[৫] দূরপাল্লার বাসের চালক আসাদ খন্দকার বলেন, দশমাইল এলাকা থেকে ১৫ কিলোমিটার সড়ক পার হয়ে কুষ্টিয়া শহরে আসতে কমপক্ষে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগছে। আগে যেখানে আধা ঘণ্টায় আসা যেত। মাঝে মাঝে এসব স্থানে ভারী যানবাহন চলতে গিয়ে বিকল হয়ে রাস্তার মাঝে পড়ে থাকে।সবমিলিয়ে রাস্তায় গাড়ি চালানোর কোনো পরিবেশ নেই।
[৬] তালবাড়িয়া থেকে মোটরসাইকেলে করে কুষ্টিয়া শহরে যাতায়াত করেন ব্যবসায়ী ফজলে করিম। তিনি বলেন, দীর্ঘ যানজটের কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তায় গর্তের কারণে অনেক সময় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সঠিক সময়ে কোনো কাজও করা সম্ভব হচ্ছে না সড়কের বেহাল দশার কারণে।
[৭] তালবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা বরকত আলী বলেন, এ সড়কে প্রতিদিন উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি ধুলা দুর্ভোগের কারণে সড়ক সংস্কারের দাবিতে উপজেলার মীর আবদুল করিম কলেজের ২ শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা একসঙ্গে মিলে ওই মহাসড়ক আড়াই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এই সড়ক বেহাল অনেক দিন ধরেই। এক বছরের অধিক সময় ধরে এই সড়কে বেহাল দশা। বর্তমানে গর্তের কারণে একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
[৮] স্থানীয় সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, প্রায় তিন বছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিলো। তখন পণ্যবোঝাই ভারী ভারী যানবাহন চলাচলের মতো সক্ষমতার বিষয়টি মাথায় রাখা হয়নি। সংস্কারকাজের কিছুদিন পর সড়কের বিভিন্ন স্থানে উঁচু-নিচু হতে দেখা যায়। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে সড়কটি একেবারেই যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
[৯] কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম বলেন, ভেড়ামারা উপজেলার বারোমাইল এলাকা থেকে ত্রিমোহনী পর্যন্ত সড়কটি পুনর্নির্মাণের জন্য সম্প্রতি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। খুব শিগগিরই সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হবে। সম্পাদনা: হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :