সালেহ্ বিপ্লব: [২] আফগানের পাঞ্জশির একমাত্র প্রদেশ, যেখানে এখনো নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি তালিবান। ১৫ আগস্ট গোটা আফগানিস্তান করায়ত্ত করলেও ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট অব আফগানিস্তানের (এনআরএফ) নিয়ন্ত্রণাধীন পাঞ্জশির উপত্যকায় এখনো দুপক্ষের তুমুল যুদ্ধ চলছে। অন্তত এক হাজার যোদ্ধা প্রাণ হারানোর খবর পাওয়া গেছে। এমনই এক সময়ে এনআরএফ প্রধান আহমেদ মাসউদ বললেন, শান্তি আলোচনার পথ খোলা। বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা, আল জাজিরা
[৩] আহমেদ মাসউদ ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে বলেছেন, তালিবান যদি আক্রমণ বন্ধ করে, তাহলে এনআরএফ আলোচনায় বসতে পারে।
[৪] মাসউদ বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য ধর্মীয় নেতারা একটি পরিকল্পনা পেশ করেছেন। এই পরিকল্পনাকে তিনি সমর্থন করেন, তবে সবার আগে তালিবানকে আক্রমণ বন্ধ করতে হবে।
[৫] যতোদূর জানা গেছে, এনআরএফ বাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের মধ্যেই তালিবান ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। পাঞ্জশির উপত্যকায় অবস্থান সংহত করছে।
[৬] এনআরএফ জানিয়েছে, তালিবানের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে তাদের মুখপাত্র ফাহিম দাশতি এবং একজন সেনা কমান্ডার জেনারেল ওদুদ জারা নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, প্রতিরোধের মুখে তালিবানের একজন বিখ্যাত জেনারেল ও তার ১৩ দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন। তালিবান এরই মধ্যে পাঞ্জশির দখল করেছে বলে ঘোষণা দিলেও এনআরএফ তা অস্বীকার করেছে।
[৭] রাজধানী কাবুলের উত্তরে অবস্থিত পাঞ্জশির আফগানিস্তানের ক্ষুদ্রতম প্রদেশগুলোর অন্যতম। প্রতিরোধ যুদ্ধে সুদীর্ঘকালের ঐতিহ্য রয়েছে এই প্রদেশের।
[৮] আশির দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন আফগানিস্তান দখল করেছিলো, তখনও পাঞ্জশিরে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। এরপর ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে তালিবান শাসন চলার সময়ও প্রতিরোধ গড়ে ওঠে এই উপত্যকায়। সেই প্রতিরোধের নেতা ছিলেন আহমেদ মাসউদের পিতা আহমেদ শাহ মাসউদ, যিনি আফগান জনগণের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে খ্যাত ছিলেন।
[৯] আহমেদ শাহ মাসউদ ছিলেন একজন সামরিক কমান্ডার এবং আফগানিস্তানের সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। ২০০১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তিনি অজ্ঞাতনামাদের হামলায় নিহত হন। তালিবানকেই এই হত্যার জন্য অভিযুক্ত করা হয়, কারণ তিনি ছিলেন ওসামা বিন লাদেনের ঘোরতর বিরোধী। যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার দুদিন আগে আহমেদ শাহ মাসউদকে হত্যা করা হয়েছিলো, এর সঙ্গেও একটি যোগসূত্র আছে বলে মনে করা হয়।