শিরোনাম
◈ জাকসুর ভোট গণনা শেষ, অপেক্ষা ফলের ◈ আ. লীগ নিষিদ্ধ হলেও তাদের ভোটের অধিকার নিষিদ্ধ নয় : ফাওজুল কবির ◈ নির্বাচনে কারচুপি প্রমাণিত হলে চাকরি ছেড়ে দেব : জাকসুর সিইসি ◈ টানা ৩ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা ◈ জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস, বিপক্ষে ভোট দিল যারা ◈ ভোট চুরি চলতে থাকলে ভারতেও নেপাল–বাংলাদেশের মতো গণবিক্ষোভ ঘটতে পারে: অখিলেশ যাদব ◈ আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে: লন্ডনে তথ্য উপদেষ্টা ◈ যশোর সীমান্তে স্বর্ণপাচার বেড়েছে, আট মাসে উদ্ধার ২৬ কোটি টাকার স্বর্ণবার ◈ নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা  ◈ লন্ডনে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার চেষ্টা আ. লীগ নেতাকর্মীদের (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০২:২৩ রাত
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০২:২৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) ইতিহাসের সন্তান শেখ হাসিনা, আমজনতার ‘জননেত্রী’ এবং অগ্রগামী বাংলাদেশ

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) : শেখ হাসিনার মতো বহুমাত্রিক একজন মানুষ ইতিহাসে এরই মাঝে যে অমরত্বের ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন এইটুকু বোঝার যোগ্যতা আমার আছে, তবে কেন আর কোন-কোন কারণে তা মূল্যায়নের দুঃসাহস আমি কখনোই করি না। তারপরও আমার কাছে মনে হয় যে অসংখ্য, অজস্র কারণে মানব ইতিহাসে একজন শেখ হাসিনার নাম জ্বল-জ্বল করবে তার অন্যতম একটি কারণ তিনি ‘উল্টো পথের সারথী’। আমরা কথায়, বক্তৃতায় প্রায়ই বলি এদেশে সম্প্রীতির ইতিহাসটা হাজার বছরের। আমাদের প্রিয় উদ্ধৃতি চণ্ডীদাসের সেই অমর উক্তি, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’। শুধু আমরা কেন যেন ভুলে যাই অন্য সত্যটি যে, গত একশ’টি বছরেরও বেশি সময় ধরে এই ভূখন্ডে রাষ্ট্রীয়ভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে এবং তাও করা হয়েছে নজিরবীহিনভাবে। ব্রিটিশদের বঙ্গভঙ্গ, পাকিস্তান আমলে নজরুল সাহিত্যের ইসলামীকরণ আর নিষিদ্ধ রবীন্দ্রনাথ কিংবা স্বাধীন বাংলাদেশে জেনারেলদের বাংলাদেশ জিন্দাবাদ আর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম- এ সবকিছুই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের সাথে সাংঘর্ষিক। এই ধারার বিপরীতে চলার সাহস প্রথম দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী মুসলিম লীগের পথ ধরে আওয়ামী লীগকে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত করা আর বাঙালির মননে আবারও অসাম্প্রদায়িকতার চেতনাটি জাগ্রত করার শতভাগ কৃতিত্বটি তার। কাজটি অবশ্য খুবই কঠিন ছিলো। এর সংখ্যাতাত্ত্বিক প্রমাণ ’৭০- এর নির্বাচন, যেখানে ১৬৯- এর মধ্যে ১৬৭ আসনে জিতে আওয়ামী লীগের ভূমিধ্বস বিজয়। অথচ এই বিজয়ের অন্যপিঠের বাস্তবতাটা ছিলো এই যে, পাকিস্তানের ২৫ বছরের বিরামহীন শোষণ-নিপীড়ন আর ’৭০-এর প্রলয়ঙ্করী ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানি শাসকদের চরম উদাসীনতার প্রেক্ষাপটে দাড়িয়েও এই নির্বাচনটিতে প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোটার নৌকা মার্কার উল্টো প্রতীকে ভোট দিতে কার্পন্য করেনি। অর্থাৎ সেদিনও প্রায় ২ কোটি বাঙালি মনেপ্রাণে পাকিস্তানই চেয়েছে, বাংলাদেশ চায়নি।

সংখ্যাতাত্ত্বিক হিসাবে এই ২ কোটি আজ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটির আশেপাশে। উর্দুতে অসাম্প্রদায়িকতার কোন প্রতিশব্দ নেই। অসাম্প্রদায়িকতার উর্দু ‘লা-দ্বিনীয়াত’, যার বাংলা মানে দাঁড়ায় ধর্মহীনতা। এই ৫ কোটির মননে গেথে গেছে ‘লা-দ্বিনীয়াত’ আর পাকিস্তান। এই মানুষগুলো আসলে ‘প্রবাসী পাকিস্তানি’। এবং মজার ব্যাপার অনেক সময় এরা নিজেরাই তা জানে না। পাকিস্তান তাদের মজ্জ্বাগত। এরাই কখনো বিএনপি, তো কখনো জামায়াত। তাদের কাছে গণতন্ত্র কখনো ‘ডক্টর সাহেবের ডক্ট্র্রিন’ তো কখনো ‘ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের মাইনাস ওয়ান’। এই বিরুদ্ধ স্রোতের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে বাঙালির অর্থনৈতিক আর প্রযুক্তিগত মুক্তির পাশাপাশি মনোজাগতিক মুক্তি নিশ্চিত করায় শেখ হাসিনার যে পথচলা তাও কখনোই সুগম ছিলো না। এর প্রমাণ শুধু তার জীবন নাশের চেষ্টাই যে ক’বার করা হয়েছে তা দু’হাতের সব আঙ্গুলে গুনেও শেষ করা অসম্ভব। ২০৪১- এর উন্নত বাংলাদেশ কিংবা ২১২০- এর সম্মৃদ্ধ বঙ্গীয় ব-দ্বীপটি যে একটি অসাম্প্রদায়িক বাঙালী জাতির বাসভূমি হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে চিহ্নিত হবে, জাতির পিতার সেই স্বপ্নের সফল রূপকার ‘উল্টো পথের সারথী’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিহাস এজন্য তাকে মূল্যায়নে ভুল করতে পারে না। বাঙালির এই আশার বাতিঘর পা রাখছেন ’৭৫- এ। এই বিশেষ দিনটিতে তার শতায়ুর জন্য আমার প্রার্থনা নিরন্তর।
লেখক : ডিভিশনাল হেড, ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, আঞ্চলিক পরামর্শক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, সদস্য সচিব, সম্প্রীতি বাংলাদেশ

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়