বাবুল আক্তার: [২] যশোরের চৌগাছায় এবার সোনা ঝরছে পাটের সোনালী আঁশ থেকে। হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। মৌসুমের শুরু থেকেই ভাল দামে বিক্রি হচ্ছে পাট। বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকার উপরে। এতেই স্বতি কৃষকের। গত মৌসুমের শেষের দিকে হঠাৎই পাটের দাম বৃদ্ধি পায়। সে ধারাবাহিকতায় উপজেলায় পাটের চাষ বেড়েছে। কাটা -ধোঁয়ার পরে তা এখন বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছে।
[৩] উপজেলার কয়েকটি অঞ্চল ছাড়া বেশির ভাগ এলাকায় পানির স্বল্পতায় পাট পচানো ও ধোয়ার কাজে বেগ পেতে হচ্ছে কৃষকদের। জাগ দিতে লাগছে বাড়তি মজুরি ও শ্রম।
[৪] উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে এ বছর উপজেলায় পাট চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল দুই হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু পাটের দাম বেশি থাকায় লক্ষমাত্রার চেয়ে ২৫০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের চাষীদের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমানের সরকারি প্রণোদনার বীজ তিতরণ করা হলেও ভারত সীমন্তবর্তী উপজেলা হওয়ার কারনে গ্রামাঞ্চলের কিছু কিছু চাষীরা ভারতীয় বিভিন্ন জাতের পাট বীজ বপন করেন।
[৫] উপজেলার অন্যতম পাট বাজার পুড়াপাড়ায় ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় বাজার জুড়ে। সপ্তাহের রবি ও বুধবার সাপ্তাহিক হাট বসে এখানে। এছাড়া প্রতিদিনই আড়ৎদার পাট ক্রয় করেন ক্রেতাদের কাছ থেকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারীরা এখান থেকে ট্রাক ভরে পাট নিয়ে যায় বিভিন্ন এলাকায় । ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, পাবনাসহ দেশের নানা জেলাতে যায় এ অঞ্চলের পাট।
[৬] কৃষকেরা জানান, এবার ১বিঘা জমিতে পাট চাষ ও কাটা-ধোয়া করতে ১৫ থেকে প্রায় ১৮ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে তাদের।বিঘা প্রতি এবার ফলন হয়েছে ১২ থেকে ১৩ মন। সে হিসাবে ১ মণ পাটের দাম ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি করে তারা বিঘা প্রতি ৩৯ হাজার টাকার পাট বিক্রি করতে পারছেন । অবশ্য একটু নিম্ন মানের পাট হলে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২৮/২৯শ টাকায় বিক্রি করতে পারছে। আর মধ্যম মানের পাট ৩ হাজার টাকা দরে আবার পাটের রং উন্নত মানের হলে মণ প্রতি ৩ হাজার ২০০ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে। গড় হিসাবে মণ প্রতি পাটের দাম ৩ হাজার টাকা থাকছে।
[৭] উপজেলার রামকৃষ্ণাপুর গ্রামের চাষী আজিজুর রহমান বলেন, ১৫ কাটা জমিতে পাট চাষ করে প্রায় দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আসা করছেন তার জমিতে ১০ মণ পাট হবে। সে হিসেবে প্রতি মণ ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারলেও তার ১৮ হাজার টাকা লাভ হবে।
[৮] উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, পাটের কাংখিত বাজার দর না পেয়ে চাষিরা এক সময় পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু বর্তমানে পাটের বাজার ভাল থাকায় চাষিরা লাভবান হচ্ছে, যার কারনে প্রতি বছরই পাট চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।সম্পাদনা: সঞ্চয় বিশ্বাস