শাহীন খন্দকার: [২] করোনা যখন কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে, তখন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু। রাজধানীর পূর্ব জুরাইনে এখন ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগী। আতঙ্কে দিশেহারা স্থানীয়রা। এলাকাবাসী বলছেন, এর দায় নিতে হবে সিটি করপোরেশনকেই। মশা মারার পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকার দোহাই দিচ্ছেন স্থানীয় কাউন্সিলর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যকরী ওষুধ ছিটানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
[৩] পূর্ব জুরাইনে মাত্র ১০ গজের ব্যবধানে এখানে দুজনের প্রাণ কেড়েছে ডেঙ্গু। পলাশ নামে এক ব্যক্তির শিশু কন্যার অকালমৃত্যুতে তার বুকভাঙা কান্না যেন থামছে না। ইসরাত- নুসরাত যমজ বোন । ছোট নুসরাতকে কেড়ে নিল ডেঙ্গু।
[৪] জুরাইনের অলিগলিতে এখন স্বজন হারানোর শোক। ডেঙ্গুতে মা হারিয়েছেন মরিয়ম আক্তার নামে এক নারী। এলাকায় এমন কোনো ঘর নেই যেখানে ডেঙ্গু রোগী নেই। একটি ভবনের এক বাসাতেই আক্রান্ত হয়েছে ১৩ জন। চলতি মাসে জুরাইনেই মারা গেছে ৮ জন।
[৫] মরিয়ম আক্তার বলেন, আমার মায়ের ব্রেনে ইনফেকশন ছিল। এরপর কিডনিতে ছড়িয়ে যায়। মাকে বাঁচানো যায়নি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ: সিটি করপোরেশন কোনো কাজ করছে না। একবার এসে ধোঁয়া দিয়ে চলে যায়, এটা তো আসলে মশা মারার নিয়ম না। ৫৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বলেন, ওষুধ দিয়ে যাচ্ছে। তবে মানুষকে তো সচেতন হতে হবে। ঘরের আশপাশে ও ছাদে পানি জমে আছে। সেগুলো তো পরিষ্কার করতে হবে। এটা জনগণের দায়িত্ব, নিজ বাসা পরিষ্কার রাখা।
[৬] শনিবার ডা. প্রবীর কুমার বলেন, ডেঙ্গুতে মধ্যবয়স্কদের পাশাপাশি মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে অন্তঃসত্ত্বা নারীদেরও। ডেঙ্গু রক্তবাহিত রোগ। তাই অন্তঃসত্ত্বা নারীদের পেটের সন্তানও ঝুঁকিতে রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে মৃত সন্তানও প্রসব হচ্ছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালের প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর চাপ। এ পর্যন্ত শিশু হাসপাতালে ৪৩০ জন ভর্তি ছিল। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছে ৬ জন। মোট ভর্তি আছে শনিবার পর্যন্ত ৫৫ জন। এছাড়া মারা গেছেন ৭জন। সম্পাদনা: হাসান হাফিজ