খুজিস্তা নূর- ই নাহারিন: অনেকেই কানাডার বেগম পাড়া নিয়ে জানতে আগ্রহী। মুল শহর থেকে খানিকটা দূরে ধনী মানুষদের পদচারণা বেশি বলে কেউ কেউ অভিজাত এলাকা রিচমন্ড হিলকে বেগম পাড়া নামে আখ্যায়িত করে থাকেন। কিন্তু এটা মূলত একটি পাড়া বা স্থান নয় বিশাল কানাডা জুড়ে যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতা সম্পন্ন বিত্তবান সাহেবরা প্রাসাদসম অট্টালিকায় স্ত্রীদের রেখে কর্মসংস্থানে দেশে ফিরে জান সেসব স্থান বা তাদের ওই পরিবারগুলোকে বিদ্রূপ করে বলা হয় ‘বেগম পাড়ার’ বেগম। এই বাড়ি গুলোর দাম ১৫ কোটি থেকে শুরু হয়ে ৫০ কোটি বা তদূর্ধ হতে পারে। অনেকের আবার একাধিক বাড়ি। বেগম পাড়া সম্বন্ধে উচ্ছ্বসিত অনেকে মনে করেন কেবল এই ১২ বছরে বুঝি দেশ থেকে কানাডায় এসে বসতী গড়েছেন, কিন্তু ধারণাটা ভুল দল-মত নির্বিশেষে যখন যিনি অবৈধ উপায়ে টাকা কামিয়েছেন নিরাপত্তার খাতিরে বিদেশে পাচার করে দিয়েছেন। দুঃখজনক ভাবে সত্যি ২০০৭-২০০৮ সালের ১/১১ এর সরকার না বুঝে হলেও এই টাকা পাচারকে আরও উৎসাহিত করেছেন। কারণ সেই সময়ে অনিচ্ছাকৃত হলেও তারা ব্যবসায়ীদের মাঝে এক ধরণের ভীতি বা নিরাপত্তা হীনতার সঞ্চার করেছেন।
অসাধু উপায়ে টাকা উপার্জনকারীরা মনে করেন দেশে টাকা থাকলে বেহাত হওয়ার সম্ভাবনা সেই ক্ষেত্রে বিদেশ রাখলে সুবিধা,অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। বেশিরভাগ গারমেন্টস ব্যবসায়ী, ব্যাংক মালিক, অন্যান্য ক্ষমতায় থাকা ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করা হাজারো মানুষ ভুয়া এলসি খুলে সকলের সামনে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করে দিয়েছেন। কেবল যে কানাডা তেই এমন তা কিন্তু নয়, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, দুবাই, মালয়েশিয়া, চীন সহ ইউরোপের নানা দেশে টাকার পরিমাণ বেশি হলে সেই দেশের ইমিগ্রেন্ট হতে কোনো সমস্যা নেই। টাকা পাচারের নতুন রুট নাকি তুরস্ক আর ব্রুনাই। এদেশে বেগমরা সাধারণত একটু নাক উঁচু হয়, নিজেদের সার্কেলের বাইরে অন্য কারো সঙ্গে মিশতে চায় না। তারা নিজেরা নিজেরা কিটি পার্টি করে সাঁজ গোঁজ, শপিং এ সময় কাঁটায়। আর এদেশে যারা পরিশ্রম করে টাকা কামায় তাদেরকে দূর থেকে তারা চোর ভাবে, দুর্নীতিবাজ ভাবে। সাহেবরা দেশে যে কি করে সময় কাটায় আপনারা সবাই জানেন। কারণ প্রকাশিত সত্য হচ্ছে একা থাকা কষ্টকর বিধায় ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই আবার অনেক ক্ষেত্রে চাইলেও সুন্দরী নারীরা তাদের একা থাকতে দেয় না। যেখানে মধু (টাকা) সেখানেই ভ্রমরের(নারী) গুঞ্জন। তাই আগের মতো বেগমরা আর সাহেবকে একা ছাড়তে চান না, কিংবা ছাড়তে বাধ্য হলেও সময় অসময়ে স্কাইপে কথা বলার সময় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চারপাশ দেখাতে বাধ্য হন। অনেকে আবার বাড়তি টাকা দিয়ে সাহেবের পেছনে জাসুস (গোয়েন্দা) লাগান। অনেকটা টম অ্যান্ড জেরি কার্টুন শো এর মতো এই টানাটানি চলতেই থাকে। ফেসবুক থেকে