নিজস্ব প্রতিবেদক : [২] আবুল হাসান রাজু তিনি একটি বিশ্ব রেকর্ডের জন্মদাতা। টেস্ট ক্রিকেটের সুদীর্ঘ ১৪১ বছরের ইতিহাসে মাত্র দু’জন ব্যাটসম্যানের অভিষেকে ১০ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করার বিরল রেকর্ড গড়েছেন। যার প্রথমটি অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান রেগি ডাফ।
[৩] ১৯০২ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ১০ নম্বরে নেমে টেস্টে শতরানের দূর্লভ কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন রেগি ডাফ। সেটা ছিল তার প্রথম টেস্ট। তার ঠিক ১১০ বছর পর সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছিলেন আবুল হাসান রাজু।
[৪] ২০১২ সালের নভেম্বরে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যাট হাতে শুরুতেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেন আবুল হাসান রাজু।
[৫] মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে নবম উইকেটে ১৮৪ রানের বিরাট পার্টনারশিপ গড়ার পাশাপাশি সেঞ্চুরি (১৬৩ মিনিটে ১২৩ বলে ১৪ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ১১৩) করে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে ফেলেন সিলেটের এ আত্মপ্রত্যয়ী যুবা।
[৬] টেস্ট ক্রিকেটের ১৪১ বছরে ইতিহাসে ১০ নম্বর পজিসনে ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরি করার ঘটনাই মোটে ৪টি। কারণ, যিনি ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন, তার সঙ্গী থাকে মোটে দু’জন। দুটি মাত্র জুটি বা পার্টনারশিপে একজনের তিন অঙ্কে পৌঁছে যাওয়া আসলেই খুব কঠিন। অতি মানবীয় ব্যাটিং ছাড়া আসলে তা করাও সম্ভব নয়। তাই টেস্টে ১০ নম্বরে নেমে শতরানের রেকর্ড খুব কম। আবুল হাসান রাজু ঐ বিরল কৃতিত্ব দেখানো চারজনের একজন। টেস্টে সর্বশেষ ১০ নম্বরে নেমে শতরানের কৃতিত্ব আছে দক্ষিণ আফ্রিকার প্যাট সিমকক্সেরও।
[৭] কিন্তু টেস্ট অভিষেকে ১০ নম্বরের মত অত নিচে ব্যাটিং করতে নেমে শতরান করা ব্যাটসম্যান মোটে দু’জন; একজন অস্ট্রেলিয়ার রেগি ডাফ। আর দ্বিতীয়জন বাংলাদেশের আবুল হাসান রাজু। আরও একটি তথ্য আছে, সেটাও রাজুর পক্ষে।
[৮] রাজু মূলতঃ মিডিয়াম পেসার। পেস বোলারের কোটাতেই দলে জায়গা পেয়েছিলেন তিনি। রেগি ডাফ ছিলেন আসলেই ফ্রন্টলাইন ব্যাটসম্যান।
[৯] এমন দুর্দান্ত আবুল হোসেন রাজুর অবশ্য জাতীয় দলে বেশিদিন খেলা হয়নি। মাত্র তিন টেস্ট (৫ ইনিংসে এক সেঞ্চুরিসহ ১৬৫ ও ৩ উইকেট), ছয় ওয়ানডে (২ বার ব্যাট করে ৪ রান ও উইকেটশূন্য) আর ৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে (একবার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে ৯ রান ও বল হাতে ৪ খেলায় ২ উইকেট, সেরা ২/৩৩) রাজু তিন ফরম্যাটেই জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়েছেন।
[১০] দিনক্ষণের হিসেবে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তার শেষ ম্যাচ ২০১৫ সালের ১৭ এপ্রিল। শেরে বাংলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম ও মুশফিকুর রহীমের জোড়া শতরানে সাজানো ম্যাচে বাংলাদেশ ৭৯ রানের বড় ব্যবধানে জিতলেও রাজু একটি উইকেটও (৫ ওভারে ০/৪২) পাননি।
[১১] আবুল হাসান রাজু ১৯৯২ সালের ৫ আগস্ট মৌলভীবাজারের কলারোয়াতে জন্মগ্রহণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :