শিরোনাম
◈ রাতে বাংলামোটরে জুলাই পদযাত্রার গাড়িতে ককটেল হামলা (ভিডিও) ◈ যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক মোকাবেলায় বাংলাদেশের চার দফা কৌশল ◈ বিআরটিএর মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কঠোর নির্দেশনা ◈ সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশ হার‌লো ৭৭ রা‌নে ◈ ২০ বছরেও অধরা এমআই-৬'র ভেতরের রুশ গুপ্তচর! (ভিডিও) ◈ নারী ফুটবলের এই অর্জন গোটা জাতির জন্য গর্বের: প্রধান উপদেষ্টা ◈ প্রবাসীদের জন্য স্বস্তি: নতুন ব্যাগেজ রুলে মোবাইল ও স্বর্ণ আনার সুবিধা বাড়লো ◈ একযোগে ৩৩ ডেপুটি জেলারকে বদলি ◈ 'মধ্যপ্রাচ্যে সিলেট-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকেরা ঘোষণা দিয়ে মারামারি করে' (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট, ২০২১, ০৫:০৭ সকাল
আপডেট : ০৩ আগস্ট, ২০২১, ০৫:০৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সরকারি নির্দেশনা অমান্য হলে গার্মেন্টস মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে শ্রম মন্ত্রণালয়

নিউজ ডেস্ক: অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে স্থানীয় কর্মীদের দিয়ে সীমিত পরিসরে পোশাক কারখানা চালুর অনুমতি দেয় সরকার। তবে গার্মেন্ট মালিকদের একাংশ ফোন/এসএমএস দিয়ে দূরের শ্রমিকদেরও কারখানায় আসতে নির্দেশ দেয়। চাকরি বাঁচানোর তাগিদে দূর-দূরান্ত থেকে ঢাকামুখী হন শ্রমিকরা। কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে যেমন তাঁদের পড়তে হয়েছে, তেমনি মোটা অঙ্কের টাকা গেছে ঢাকায় পৌঁছতে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আর শ্রম মন্ত্রণালয় বলছে, যেসব গার্মেন্ট মালিক সরকারি নির্দেশ অমান্য করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কালের কন্ঠ

সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, ঘোষিত লকডাউন শেষ হওয়ার পাঁচ দিন আগেই কারখানা খোলার ক্ষেত্রে কিছু অব্যবস্থাপনা থাকলেও সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সরকারকে দেওয়া কথা রাখেননি। স্থানীয় কর্মী দিয়ে সীমিত আকারে কারখানা খোলা রাখা হবে—এমন প্রতিশ্রুতি দিলেও মালিকরা খুদে বার্তা ও ফোন করে দূরের শ্রমিকদের আসতে বাধ্য করেছেন। এ জন্য ওই সব কারখানার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

জানতে চাইলে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শ্রমিকদের ধোঁকা দিতে পারেন না। শ্রমিকদের স্বার্থ বিবেচনা করেই পাঁচ দিন আগে কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে তথ্য ছিল, মালিকরা শ্রমিক ছাঁটাই করবেন। এ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিক ছাঁটাই না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তা ছাড়া বাংলাদেশের রপ্তানির বড় বাজারগুলো খোলা থাকার কারণে ক্রেতাদের চাপ আছে। ফলে রপ্তানি সক্ষমতা ধরে রাখতে কারখানা খুলতেই হতো। সার্বিক পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে সীমিত পরিসরে স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে কারখানা খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের সেই কথা রাখেননি মালিকরা। তাঁরা শ্রমিকদের ফোন/এসএমএস দিয়ে দূরের শ্রমিকদের কারখানায় আসতে বাধ্য করেছেন। এতে শ্রমিকদের দুর্ভোগ হয়েছে। এসব কারখানার বিরুদ্ধে আমরা তদন্ত করছি। ওই সব কারখানার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পরিসংখ্যান অনুসারে দেশের জিডিপিতে পোশাক খাতের অবদান মাত্র ১২.২৬ শতাংশ। অথচ তারা দেশের ১৭ কোটি মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলেছে। তারা শ্রমিকদের স্বার্থের কথা বললেও তাঁদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলতে কার্পণ্য করেনি। অনির্ধারিত সময়ে কারখানা খোলা এবং কাজে যোগদানের চাপে ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ছুটে আসতে হয়েছে শ্রমিকদের। এতে তিন থেকে চার গুণ বেশি ভাড়া গুনতে হয়েছে যেমন, তেমনি ভোগান্তিও ছিল চরম।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘কারখানা খোলার নির্দেশনা নিয়ে একটি অব্যবস্থাপনা ছিল। এভাবে হঠাৎ করে না ডেকে শ্রমিকদের আসার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। এ জন্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট খাতের সংগঠনগুলো তদারকির উদ্যোগ নিতে পারত। এই করোনা পরিস্থিতিতে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে কারখানা চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। কার্যাদেশের চাপ সামাল দিতে কোনোভাবেই ৩০ শতাংশের বেশি শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো ঠিক হবে না।

শ্রমিক নেতারা মনে করেন, সময়ের বিবেচনায় পাঁচ দিন হলেও রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মালিকরা সরকারের ওপর চাপ ও ক্ষমতা দেখিয়েছে। মালিকরা চাপ দিয়ে সরকারের কাছ থেকে আবারও প্রণোদনা নেওয়ার ফন্দি আঁটছেন। ভবিষেত আরো কী পেতে পারেন—এই ছক কষছেন মালিকরা। সরকার প্রণোদনা দিতে গড়িমসি করলে শ্রমিক ছাঁটাইয়ে হুংকার আসবে। মালিকরা তাঁদের স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই বোঝেন না।

শ্রমিক নেতারা এ-ও বলেন, ডাক্তার যদি স্বাস্থ্য খাতের ফ্রন্ট লাইনার হন, তাহলে শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে ফ্রন্ট লাইনার। ডাক্তাররা ঝুঁকি ভাতা পেলেও শ্রমিকরা পান না। যোগাযোগ করা হলে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘মালিকদের জন্য সরকারের প্রণোদনা থাকলেও শ্রমিকদের জন্য কিছুই থাকে না। বরং জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে কাজে যোগ দিতে হয়। সরকার রপ্তানি বাড়াতে শ্রমিকদের ঝুঁকিতে ফেলে আর মালিক উৎপাদন বাড়াতে তাঁদের ঝুঁকিতে ফেলেন। দুই পক্ষ মিলে বাড়তি কাজ এবং বাড়তি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে দেয় তাঁদের।’

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘পোশাক রপ্তানির এখন ভরা মৌসুম। এ ছাড়া এই মুহূর্তে কোনো রকম রপ্তানি ব্যাহত হলে শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশও পোশাক রপ্তানির বাজার হারাতে পারে। এতে রপ্তানির পাশাপাশি কর্মসংস্থানেও বড় ধাক্কা খাবে বাংলাদেশ। তাই সরকার এসব বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েছে। এ ছাড়া পোশাক খাতের ৭৫ শতাংশ শ্রমিকের আগামী এক মাসের মধ্যে টিকার আওতায় আনা হবে। এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঈদের আগে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিককে টিকা দেওয়া হয়েছে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়