সুজন কৈরী : [২] ঈদুল আযহার ছুটি শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। করোনার সংক্রমণ রোধে আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে কঠোর বিধিনিষেধ। এজন্য রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। তবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হতে দেখা গেছে।
[৩] বিপরীতে আবার ঈদের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবারও ঢাকা ছেড়ে বাড়ি ফিরছেন অনেকে।
[৪] রাজধানীর মহাখালী, সায়েদাবাদ ও গাবতলী বাস টার্নিমাল এবং সদরঘাট লঞ্চ টার্নিমালে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেড়েছে ঢাকামুখী মানুষের চাপ। কেউ পরিবার নিয়ে আবার কেউ একা চাকরি বা ব্যবসার কারণে ঢাকায় ফিরছেন।
[৫] সকালে সদরঘাটে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনার লঞ্চগুলো ঘাটে ভিড়ে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাদারীপুর, শরীয়তপুর, চাঁদপুর ও মুন্সিগঞ্জের লঞ্চ ভিড়তে শুরু করে।
[৬] পটুয়াখালী থেকে সদরঘাটে আসা যাত্রীদের একজন আবুল হাসেম বলেন, ঈদের পরদিন এত মানুষ ঢাকায় আসা এই প্রথম দেখলাম। ১৬ বছর ধরে ঢাকায় থাকার জীবনে আমি নিজেও এই প্রথম ঈদের পরদিন সকালে ঢাকায় এলাম। তিনি জানান, কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জে ব্যবসা করেন তিনি। সুযোগ থাকলে আরও কয়েকদিন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে আসতেন।
[৭] শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় ফেরা সোলেমান মিয়া বলেন, ঈদের দুই দিন আগে পরিবার নিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলাম। শুক্রবার থেকে লকডাউন শুরু হবে তাই বাড়িতে পরিবার রেখে ঈদের পরদিন ঢাকায় ফিরলাম। একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। শনিবার থেকে নিয়মিত অফিস শুরু হবে। সেজন্য ঢাকায় এসেছি। তবে কাল থেকে লকডাউন না থাকলে আরও দুদিন বাড়িতে কাটাতে পারতাম।
[৮] লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে এ যাত্রী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি তো দূরের কথা ঠাসাঠাসি করে লোকজনকে ঢাকায় ফিরতে দেখলাম। কোনোকিছুই মানা হচ্ছে না। অনেকের মুখে তো মাস্কও নেই।
[৯] গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, কর্মজীবী মানুষ ঈদের দ্বিতীয় দিন রাজধানীতে ফিরছেন। তাদের অধিকাংশই সরকারি চাকরিজীবি। এছাড়া বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালে চাকরিরতরাও ফিরছেন। আবার অনেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ছেন।
[১০] ন্যাশনাল ও দেশ ট্রাভেলসের কাউন্টারে দ্বায়িত্বরত আব্দুল্লাহ বলেন, সকাল থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত রাজশাহী থেকে ৬টি বাস ঢাকায় এসেছে। প্রতিটি গাড়িতেই যাত্রী পরিপূর্ণ ছিলো। যাত্রীদের চাপের কারণে মাইক্রোবাসও ভাড়া করতে হয়েছে।
[১১] শাহজাদপুর ট্রাভেলসের কাউন্টারে দ্বায়িত্বরত কর্মকর্তা বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমাদের ৬টি বাস ঢাকায় এসেছে। রাত পর্যন্ত আরও অন্তত চারটি বাস আসবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি গাড়ি যাত্রী নিয়ে এসেছে।
[১২] মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালেও ছিলো যাত্রীদের ঢাকায় ফেরার ভিড়। আবার কাউকে কাউকে গ্রামের বাড়িতেও যেতে দেখা গেছে। তাদের একজন সাদেক জানান, তিনি ঢাকায় ফুটপাতে ব্যবসা করেন। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ব্যবসা বন্ধ থাকবে। এজন্য গ্রামের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।
[১৩] দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মস্থলগামী মানুষের চাপ বেড়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় বাড়তে থাকে। এছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের চাপ দেখা যায়। তবে সামাজিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি। গাদাগাদি করে ফেরিতে উঠানামা করেন যাত্রীরা।
[১৪] বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শিহাব উদ্দিন জানান, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হবে। ফলে অনেকে ঢাকামুখী ও ঘরমুখী হচ্ছে। এতে বেড়েছে দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহন ও যাত্রীদের ভিড়। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও