লিহান লিমা: [২] গত ১০ জুলাই কর্তৃপক্ষ ঠাকুরগাঁওয়ের তিন সাংবাদিক তানভীর হাসান তনু, রহিম শুভ্র, আবদুল লতিফ লাটুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তদন্ত কাজ শুরু করে। তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সরকারী তদন্তের নিন্দা জানিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্ট (আইএফজি) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ক্রমাগত সাংবাদিকদের হুমকি এবং অধিকার ক্ষুণ্নের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। আমরা তিন সাংবাদিককের মুক্তি, তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবী জানাচ্ছি।’ আইএফজি
[৩]এই তিনজন ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং করোনা ভাইরাস রোগী খাদ্য সরবরাহ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। এই প্রতিবেদন জাগো নিউজ, নিউজবাংলা২৪.কম এবং যুগান্তরে প্রকাশিত হয়। তারা প্রতিবেদনে দাবী করেন, হাসপাতালগুলো সরকারের নিয়ম অনুযায়ী রোগীদের ৩’শ টাকার খাবারের বদলে ৬০-৭০ টাকার খাবার দেয়। ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের সুপারিনন্ডেন্ট তার দায়ের করা অভিযোগে দাবী করেন, হাসপাতালের সম্মান ক্ষুণ্ন ও শত্রুতামূলক উদ্দেশ্য থেকে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তে এই তিন সাংবাদিকের প্রতিবেদন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারার লঙ্ঘন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাতে সাজা হলে তিন থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ভোগ করতে হবে।
[৪]২০১৮ সালে এই আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই গণমাধ্যমকে দমিয়ে রাখতে এবং ভিন্নমত দমনে এই আইন ক্রমাগত ব্যবহার করা হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা ১৯ এর মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৪৫৭জনকে গ্রেপ্তার ও শাস্তি দেয়া হয়েছে, ২০১৮ সালে আইন পাশের পর থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এই আইনে ১৯৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৫জনই সাংবাদিক। এই আইনের ধারায় সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড এবং ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
[৫]তিন সাংবাদিকের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাদের উপর করা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)।
আপনার মতামত লিখুন :