খান আসাদ: সহিংসতার শিকার নারীকে, নিপীড়িতকে, যাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে তাঁকে দায়ী করা এবং ঘাতক, নিপীড়ক ও সহিংস অপরাধীকে আড়াল করার নাম ভিক্টিম ব্লেমিং। ভিক্টিম ব্লেমিং সহিংসতার শিকারকে দায়ী করার মধ্য দিয়ে, ঘাতককে, নিপীড়ককে, যৌনপীড়নকারীকে আড়াল করে, তার অপরাধ লঘু করার চেষ্টা করে। সহিংস ঘাতকের পক্ষে সহানুভূতি তৈরির চেষ্টা করে। ‘ভিক্টিমেরও দোষ আছে’, এই ধারণা দেওয়ার মধ্যদিয়ে চেষ্টা করে সহিংস ঘাতকের দোষের সমান্তরালে নিপীড়িতকে নিয়ে আসার।
তিন ধরনের কারণে, ভিক্টিম ব্লেমিং হয়। প্রথমে, অজ্ঞতা বা চিন্তার অক্ষমতা। এরা মনে করে ভিক্টিমের উপায় ছিল, বাঁচার, কিন্তু সে ইচ্ছে করে সহিংসতার শিকার হয়েছে। তাদের অজ্ঞতা এদের জাজমেন্টাল দৃষ্টিকোণের কারণে। এরা ভিক্টিমের বাস্তবতা বুঝতে চায় না। এরা অনুমান করে, ভিকটিম স্বাধীনভাবে অংশ নিয়েছে বা ঘাতককে প্রভোক করেছে। এরা ব্যক্তিকে দেখে, তাঁর সামাজিক প্রেক্ষিতকে নয়।
দ্বিতীয় কারণ মতাদর্শ, শ্রেণি বা পিতৃতান্ত্রিক মতাদর্শ। কোন নারী সহিংসতার শিকার হলে, পিতৃতান্ত্রিক নারীপুরুষ, শুরু করে, নারীর পোশাক, একা চলাচল, অসময়ে ঘরের বাইরে থাকা, প্রতারক কেন আগে চিনতে পারেনি, ইত্যাদি ইত্যাদি আলাপ দিয়ে। এরা নারীর প্রতি সহিংসতার দায় নারীর উপর চাপিয়ে দেয়।
তৃতীয়, ব্যক্তিস্বার্থ। যেমন অনেক আইনজীবী বা সাংবাদিক, শুধু টাকার জন্য, ভিক্টিম ব্লেমিং করে। এরা সচেতনভাবেই সহিংস ঘাতকের পক্ষ নেয়। এরা এদের চেতনা ও শুভবুদ্ধি দুটোই বিক্রি করে, টাকার কাছে। সামাজিক মাধ্যমে যারা ভিক্টিম ব্লেমিং করছে, তাঁদের প্রতিহত করুন। কারণ কি জানেন, এরা নারী ও শিশুর প্রতি আগামী আরেকটি সহিংস নিপীড়নের সাংস্কৃতিক বাতাবরণ তৈরি করে। এদের এখনই থামান, সর্বশক্তি দিয়ে। নারী ও শিশুদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য।