তানভীর শুভ: করোনা নিয়ে প্রায় সকলেই নিজ নিজ স্থান থেকে বিশেষজ্ঞ। সেটা স্বাস্থ্য,শিক্ষা, যোগাযোগ,ব্যবসা প্রায় সকল ক্ষেত্রেই। কখনো করোনা হাসপাতালের দরজা না মাড়ানোরাই এসব বিষয়ে ফেসবুকটাকে মুখরিত করে রাখেন। ঢাকা মেডিকেলের কোভিড ডাক্তারদের খাওয়া দাওয়ায় ২০ কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে ফেসবুকের আদালতে সেকি তুঘলকি কান্ড। নিজে ৬ মাস কুর্মিটোলা কোভিড হাসপাতালে কাজ করেছি, হোটেলে থেকেছি। নিজ বাসায় থেকেও মাঝে মাঝে এতো ভালো মানের খাবার আমি কেন অনেক ডাক্তারের কপালেই জুটতো না। শুরুতে পিপিই, টেস্ট কিটের অনেক ঘাটতি ছিলো। এটাই কি স্বাভাবিক না? বাংলাদেশ তো আমেরিকা, ইউরোপের মত অর্থ বিত্তে উর্বর জাতি না, যে চাইলেই অল্প সময়ে সরকার সব সমস্যা সমাধান করে ফেলবে। তার উপর রয়েছে শ্রেণিবিশেষে ফলনশীল দুর্নীতিবাজদের আখড়া। সময় গড়াতেই টেস্ট কিট, পিপিই মাস্ক সবকিছুরই সমাধান হয়ে গেলো। প্রাইভেটে চার হাজার করে নেয়া জঞ চঈজ পরীক্ষা সরকারি হাসপাতালে মাত্র ১০০টাকা। এই মাসে সেটা সম্পূর্ণ ফ্রি করা হয়েছে। ভ্যাক্সিন না আনলেও সমস্যা, আনলেও সমালোচনা। সাধারণ মানুষের কথা বাদ দিলাম, অনেক ডাক্তার ভ্যাক্সিন নিবেন না। তাদের মনে সন্দেহ, এটা আসল তো? ভেজাল নাই তো? সারা গিলবার্টের চেয়েও বড় বড় ভ্যাক্সিন বিশারদের দেখা মিলে এই দেশে। একজনতো ভ্যাক্সিন নিয়েও বলে এটার ভিতর নাকি পানি। কিন্তু তারপরেও সে নিয়েছে।
দুর্নীতির সঙ্গে হিপোক্রেসিতেও বাঙালির চ্যাম্পিয়ন হবার যোগ্যতা রয়েছে। সরকার লকডাউন দিলেও সমস্যা আবার না দিলেও সমালোচনা। কঠোর লকডাউনে রাস্তায় নামলে পুলিশের লাঠিপেটা করলেও সমস্যা আবার ছেড়ে দিলে, তখন লকডাউন নিয়ে ফেসবুকে হাস্যরস। বেসরকারি খাতের চাকুরিজীবীরা খারাপ আছেন কিন্তু দেশের প্রায় ১২/১৩ লক্ষ সরকারি চাকুরিজীবীরা মাসের ২ তারিখেই পুরো বেতনটাই পেয়ে যাচ্ছেন, সেটা নিয়ে কারো শুকরিয়া নেই। কোভিড ডাক্তারদের প্রণোদনা নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৬ মাস আগেই ১০০ কোটি টাকা কোভিড ডাক্তার,নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে বিতরণের ঘোষণা দিয়েছেন। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সেটা পেতে দেরি হচ্ছিলো। এদিকে পুলিশ ব্যাংকার সবাই প্রণোদনার অর্থ অনেক আগেই পেয়ে গেছেন। কারণ তাদের মন্ত্রণালয় ও তাদের পেশার লোকজনের মাঝে ইউনিটি খুব ভালো। ডাক্তারদের প্রণোদনার অর্থ পাচ্ছেনা বলে ফেসবুকে অনেকেই সরব ছিলেন। কিন্তু এই মাস থেকে প্রণোদনার টাকা/ চেক হাতে পেয়ে সবাই যেন নীরব হয়ে গিয়েছে। করোনা অতিমারিতে প্রতিমাসে ঝামেলা ছাড়াই বেতন উত্তোলন, ঈদ বোনাস,পরিবারের সবাইকে দ্রুত সময়ে ভ্যাক্সিন দেয়া এবং আজ প্রণোদনার চেক হাতে পাওয়ায় মহান আল্লাহর নিকট অশেষ শুকরিয়া। যার হাত ধরে আল্লাহ এই কঠিন কাজগুলো সহজ করেছেন, সেই বাংলাদেশ সরকার ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। ফেসবুক থেকে