আসাদুজ্জামান বাবুল : [২] গত সাত বছরেও ঠিক হয়নি গোপালগঞ্জ আড়াইশ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের অতিগুরুত্বপূর্ণ এমআরআই মেশিন, সিটি স্ক্যান ও ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনসহ তিনটি মেশিন। আজও খুজে পাওয়া যায়নি মেশিনগুলো ক্রয়ের ৫০ কোটি টাকার কাগজপত্রের সেই ফাইলটিও। সরকারের প্রায় ৪০ কোটি টাকায় ক্রয়কৃত নিন্মমানের মেশিনগুলো ক্রয়ের সাথে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হাসপাতালের সাবেক হেড়ক্লাক বর্তমান সিভিলসার্জন অফিসের হেড়ক্লাক (বড়বাবু) আজাদসহ অন্যান্যরা বহাল তবিয়তে আজও চাকুরীতে অধ্যায়নরত।
[৩] করোনাকালীন সময়ে অতিগুরুত্বপূর্ণ মেশিনগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো থাকায় একদিকে স্বাস্থ্যসেবা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছেনরোগীরা অন্যদিকে মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মেশিনগুলো।
[৪] হাসপাতালের দায়িত্বশীল একটি সূত্র আমাদের এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, এমআরআই মেশিনের হিলিয়াম গ্যাস শেষ হয়ে যাওয়ার ৬ বছর পার হয়ে গেলেও তা আর চালু করা সম্ভব হয়নি।সাড়ে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৫ সালে সরকারী হাসপাতালে আসা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে একটি এমআরআই মেশিন ক্রয় করা হয়। কিছুদিন চালু থাকার পর মেশিনটির হিলিয়াম গ্যাস শেষ হয়ে যায়।
[৫] এরপর থেকেই মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ২০১৩ সালে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জন্য প্রায় ১০ কোটি ৬৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ব্যয়ে সিটি স্ক্যান মেশিন ও ২০১৪ সালে ১০ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ডিজিট্যাল এক্স-রে মেশিন ক্রয় করা হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণ দেখিয়ে সিটি স্ক্যান মেশিনটিও অকেজো দেখানো হয়। এছাড়া ডিজিট্যাল এক্স-রে মেশিনটির সফটওয়্যার নষ্ট হওয়ার কারণে গত ৬ মাস ধরে মেশিনটি অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকায় দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।মেশিনগুলো অপারেটরের দায়িত্বে হাসপাতালে নিয়োজিত দক্ষ টেকনোলজিরা বসে বসে সরকারের বেতন নিচ্ছেন। কেবলমাত্র তারা এসব মেশিন অপারেট করতে পারলেও মেশিনের ত্রুটি চিহ্নিত ও মেরামত করতে পারেন না।পাঁচতলা
[৬] ভবনের হাসপাতালের নিচতলায় এক্স-রে কক্ষের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, গোপালগঞ্জের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার উন্নতমানের ৩টি মেশিন ক্রয় করতে বললেও হানপাতালের একটু কুচক্রীমহল ঠিকাদারের সঙ্গেঁ যোগসুত্র করে পরিকল্পিতভাবে সরকারের প্রায় ৪০ কোটি টাকা মুল্যে দেখিয়ে নিম্নমানের মেশিন ক্রয় করেছে।
[৭] অতিগুরুত্বপূর্ণ মেশিন ঠিক না থাকায় গোপালগঞ্জসহ আশপাশ ৪/৫টি জেলার শত শত মানুষ সরকারী হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা থেকে বন্ঞ্চিত হচ্ছেন। অধিকাংশ রোগীরা এমআরআই ও এক্স-রে না করতে পেরে বিভিন্ন ক্লিনিকে গিয়ে উচ্চ মূল্য এক্স-রে করছেন এমন কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। ওইদিকে, সিটি স্ক্যান মেশিনের কক্ষটি বন্ধ করে পাশের কক্ষে দুজন টেকনোলজিকে বসে থাকতে দেখা গেছে।