ভূঁইয়া আশিক রহমান: [২] রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের কৃষিপণ্যের গুরুত্ব বাড়াতে কৃষি বিপণন নিয়ে গবেষণা ও ব্র্যান্ডিং করা দরকার। তিনি বলেন, পণ্যের মান উন্নতি করা উচিত। যে পণ্য আমরা রপ্তানি করছি, পণ্যের মান ঠিক আছে কী নেইÑ সেদিকে নজর রাখতে হবে। শুধু পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিতে রপ্তানিতে কৃষিপণ্যের গুরুত্ব হারাচ্ছে, এটা কতোটা ঠিক বলা মুশকিল। তবে পণ্যের মানোন্নয়নের পাশাপাশি কৃষিপণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষিপণ্যের ভালো ব্র্যান্ডিং করতে পারলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের কৃষিপণ্যের গুরুত্ব নিশ্চয়ই বাড়বে। কৃষিজাত পণ্যের ব্রান্ডিং হলে পণ্য সম্পর্কে মানুষ জানবে, পরিচিতি পাবে। একটা আস্থা ও নির্ভরতার জায়গা তৈরি করতে পারলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের কৃষিপণ্যের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে।
[৩] এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছ থেকে কেন, ‘কৃষিপণ্য কিনবেন’ এর সঠিক ব্যাখ্যা যদি আমরা কৃষি বিপণনে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে এর সুফল পাওয়া যাবে। সাসটেইনেবল কৃষি মার্কেটের জন্য ব্র্যান্ডিংয়ের বিকল্প নেই। এই ব্র্যান্ডিংয়ে সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি সহযোগিতা করবে। প্রাণ ও ওয়ালটনের পর আর কোনো পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের সেভাবে ব্র্যান্ডিং হয়নি। আমাদের মনে রাখতে হবে, ব্র্যান্ডিংয়ের কারণেই প্রাণ ও ওয়ালটন এখন আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত এবং জনপ্রিয়। শুধু মধ্যপ্রাচ্যই নয়, ওয়ালটন এখন বিশে^র অনেক দেশেই চিনে। প্রাণকেও চিনে। আমাদের নতুন কোনো ব্র্যান্ডিং নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবল প্রতিযোগিতা চলে। প্রতিযোগিতার বাজারে সাসটেইনেবল হতে হলে ব্র্যান্ডিং অবশ্যই করতে হবে।
[৪] ড. আহমদ আল কবির বলেন, কৃষিপণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। সরকার তাদের সাপোর্ট দেবে। যতো ধরনের বাঁধা আছে পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য, পরিচিত ও জনপ্রিয় করার জন্য, সেই সহযোগিতাটা সরকার করবে। প্রয়োজনে ইনসেনটিভ দেবে। গবেষণায় সহযোগিতা করবে। ব্র্যান্ডিংয়ে সরকার সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। পণ্যের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং সরকার কোনোদিনই করতে পারবে না। কোনো সরকারই তা করেনি। কারণ সরকার ব্যবসা বোঝে না। সরকারকে ব্যবসা বোঝাবে বেসরকারি খাত।
[৫] রপ্তানিতে কৃষিপণ্য কেন গুরুত্ব হারাচ্ছে তা নিয়ে গবেষণা করতে হবে। কৃষি মার্কেটিং নিয়ে যারা গবেষণা করছেন, তাদের আরও উৎসাহিত করতে হবে। তারা যেন কৃষি বিপণন নিয়ে গবেষণা করেন। রূপালী ব্যাংকের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, নতুন নতুন অনেক কৃষিপণ্য আমাদের আসছে। আলুর জন্য সারাদেশে যে কোল্ড স্টোরেজ আছে, এরকম আরও কোল্ড স্টোরেজ তৈরি করতে হবে। কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত কোল্ড স্টোরেজ দরকার। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারে। আর্থিক সহযোগিতার চেয়েও বেশি দরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। সকলে সমন্বিতভাবে কাজ করলে রপ্তানিতেও গুরুত্ব হারানোর শঙ্কা কেটে যাবে।