রবিউল আলম: এক কোটি বিশ থেকে পঁচিশ লাখ পশু কোরবানি হয় বাংলাদেশে। প্রতি বছর পশুর চামড়া রক্ষার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রশিক্ষণের অনেকটা দায়িত্ব পালন করতে হয় আমাকে। কিছু কথা বলা ও শোনার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পর্বের সমাপনী। কাজের কাজ কতোটুকু করতে পারলাম, কী করণীয়, শোনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাউকে পাওয়া যায়নি। রপ্তানির দ্বিতীয় খাত চামড়া, সরকার চাইলে এক ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির চামড়ায় লবণ দেওয়া সম্ভব। লাখ টাকার পশু, দশ হাজার টাকা বানানোর জন্য মজুরি, দড়ি, পলিথিন বাড়তি বিশ হাজার টাকা যারা খরচ করতে পারে। সঙ্গে একশত টাকার লবণ যুক্ত করে দেশের জন্য, জাতির জন্য উপহার প্রতিটি কোরবানি দাতাকে বুঝিয়ে বলতে পারলেই রপ্তানির মান উন্নত হবে। এতে কোরবানি দাতার আলাদা কোনো শ্রমের প্রয়োজন হবে না।
গরু যিনি বানাবেন, তিনিই লবণ মাখিয়ে দেবেন। সময় লাগবে মাত্র পাঁচ মিনিট। যিনি চামড়া কিনে নেবেন, ক্রেতার অভাবে রাতে চামড়া পঁচে গেলো বলে চিৎকার করতে হবে না। জাতীয় সম্পদ নষ্ট হবে না। চামড়ার মান হবে বিশ্বমানের। প্রতিজন কোরবানি দাতাকে মনে করতে হবে, আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির, গরিব মিসকিনের জন্য লাখ টাকা ব্যয় করতে পারলে, দেশ ও জাতির জন্য একশত টাকা, ছাগলের চামড়ার জন্য আধা কেজি লবণ মাত্র দশ টাকা খরচ করতে পারবো না? আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব পালন করি, তবে একটি চামড়াও পঁচতে পারবে না। আসুন আমরা চামড়া শিল্পের মালিকরা শুরু করি, নিজের কোরবানির চামড়া লবণ ছাড়া বিক্রি করবো না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও দায়িত্বে যারা আছেন,ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে জাতিকে অভিহিত করি। মাদ্রাসা, এতিমখানা, মসজিদ কমিটিকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনি। মাংস ব্যবসায়ী, মাংস শ্রমিকদের একটু দেখিয়ে দিলেই চলবে। কোরবানি দাতাকে বুঝতে হবে, চামড়া শিল্পের মালিকরা টাকার মালিক। সরকার ও জাতি ডলারের মালিক। বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়ন জড়িত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বুঝতে হবে, প্রশিক্ষণের নামে টাকার অপচয় নয়। প্রকৃত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাতীয় সম্পদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। লেখক : মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি