সোহেল রানা: [২] মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সদের অবহেলায় সুমী বেগম (২৪) নামের আর নারীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর মৃত মায়ের বুকের ওপর মাথা রেখে শুয়ে আছে ১০ মাসের শিশু। সে এখনো জানে না মা আর বেঁচে নেই। চাইলেও আর কখনো মায়ের দুধ খেতে পারবে না। তবে মায়ের নড়াচড়া না দেখে কাঁদতে থাকে শিশুটি। তার হাহাকারে ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর।
[৩] বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) বিকাল ৫টায় এ ঘটনাটি ঘটে। সে উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের মন্নান মিয়ার মেয়ে।
[৪] সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে নিহতের স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজারের খলিলপুর ইউনিয়নের সরকারবাজার এলাকার এমরান মিয়ার স্ত্রী এক সন্তানের জননী সুমী বেগমের পেটব্যথা দেখা দিলে তাকে নিয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান স্বজনরা। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে মেডিকেল টেস্ট শেষ করে হাসপাতালে সাধারণ মহিলা ওয়ার্ডে নিয়ে আসলে তার অবস্থা আশংকাজনক হয়। তা দেখে সুমির মা রাহেনা বেগম ও বাবা মন্নান মিয়া ডিউটিরত ডাক্তার ও সিনিয়র নার্সদের কাছে বারবার উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার নিয়ে যেতে তাগাদা দেন। কিন্তু তাদের কথার কর্ণপাত করেননি ডাক্তার-নার্সরা। দুপুর ১২টায় সুমির অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে সিনিয়র নার্স অনিতা সিনহা ও মিডওয়াইফ রত্না মন্ডল তাকে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর থেকেই সুমির আর কোন নড়াছড়া দেখতে না পেয়ে বার বার ডিউটি ডাক্তার মুন্না সিনহা ও নার্সরা বিরক্তিস্বরে রোগী ঘুমিয়ে আছেন, ডিস্টার্ব করবেন না বলে জানান। বিকালেও রোগীর নড়াচড়া না পেয়ে নার্সকে জানালে নার্সরা ডাক্তার মুন্না সিনহাকে নিয়ে আসলে তিনি সুমিকে মৃত ঘোষণা করেন।
[৫] মৃত সুমির মা রাহেনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য হাসপাতালের নার্স এবং ডিউটি ডাক্তারই দায়ী। আমরা তাদের বিচার চাই।
[৬] তবে ডিউটি ডাক্তার মুন্না সিনহা ও মিডওয়াইফ রত্না মন্ডলের জানান, মৃত রোগীর স্বজনেরা আমাদের কাছে রোগীকে রেফারের জন্য বলেনি। আমাদের চিকিৎসার মধ্যে কোনো ত্রুটি নেই। প্রয়োজনে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে পারেন।
[৭] এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাজেদুল কবির বলেন, এ ঘটনায় যদি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কেউ দায়ী থাকে তবে আগামীকাল (শুক্রবার) তদন্তক্রমে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা: হ্যাপি