সুজন কৈরী: [২] রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবি করা হতো। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে করা হতো অপহরণ। এরপর আটকে রেখে আদায় করা হতো মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ। এমন একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পল্লবী থানা পুলিশ।
[৩] গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- চক্রের অন্যতম সদস্য খন্দকার ওলিউল্লাহ মেহেদী ওরফে রাজু মনির, চক্রের সহযোগী শফিকুল ইসলাম শিমুল, খালিকুজ্জামান জামান, সেলিম আহমেদ ও মেহেদী হাসান ওরফে আকাশ কালু। তাদের দেওয়া তথ্যে সাভারের উলাইল এলাকার কর্ণপাড়ার একটি বাসা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী রাকিব মোল্লাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
[৪] বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাহাতাব উদ্দিন নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পল্লবী এলাকার বাসিন্দা পানির ফিল্টার ব্যবসায়ী রাকিব মোল্লা গত ২২ জুন ব্যবসায়িক কাজে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেননি। রাকিবের ভাই সানিয়াত মোল্লা পল্লবী থানায় অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ২২ জুন বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে তার ছোটভাই রাকিবের ফোনে একটি কল আসে, পানির ফিল্টার কিনতে চায় একজন। এরপর রাকিব বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরে অপহরণ চক্রের সদস্যরা তার মোবাইলে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না পেলে তার ভাইকে হত্যার হুমকি দেয়।
[৫] অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে থানা পুলিশ। অপহরণের শিকার ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোন নম্বর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ট্র্যাকিং করা হয়। পরে সাভার থানার ব্যাংক কলোনি এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের অন্যতম সদস্য খন্দকার ওলিউল্লাহ গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে চক্রের বাকি সদস্েযদর গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে অপহৃত ব্যবসায়ীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় নেশাজাতীয় পানীয় ও খাবার উদ্ধার করা হয়।
[৬] গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন, ব্যবসায়ী রাকিবকে অপহরণের পর তাকে সাভার নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে বিয়ার ও জুস খাওয়ানো হয়। জুসের সঙ্গে তাকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখে তারা। টাকা আদায়ের আগ পর্যন্ত তারা এভাবে ঘুম পড়িয়ে রাখতো।
[৭] চক্রের সদস্যরা আরও জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর পল্লবীসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঁদা দাবি করতেন। ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোনে দাবিকৃত চাঁদা দিতে রাজি না হলে তাদের নানা কৌশলে অপহরণ করা হতো। এরপর আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করতো তারা।