শিরোনাম
◈ আমরা তীব্র মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছি: যুবদল সভাপতি (ভিডিওি) ◈ পরকীয়া ঠেকাতে ছেলের কাঠমান্ডুগামী ফ্লাইটে ‘বোমা’ আতঙ্ক ছড়ানোয় মা-সহ গ্রেপ্তার ৩: র‍্যাব ◈ মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার: যৌথ তদন্তে কাজ করবে ঢাকা-কুয়ালালামপুর ◈ “বাংলা মাতৃভাষা বললে বিদেশি”, আসামে আসন্ন আদমশুমারি ঘিরে হিমন্ত বিশ্বশর্মার মন্তব্যে তোলপাড় ◈ চান্দিনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ ◈ ঘোড়াশালে এক কেজি কাঁচামরিচের দাম ৬০০ টাকা”ক্রেতারা দিশেহারা ◈ ‘আমরা মানুষ হবো কবে?’:মিটফোর্ডে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘিরে আজহারীর হৃদয়বিদারক প্রতিক্রিয়া ◈ মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: “নরপিশাচদের সামলান” — তারেক রহমানকে এনসিপি নেতা সারজিস আলমের কড়া বার্তা ◈ সেনাবাহিনী-পুলিশের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে: আইএসপিআর ◈ মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা: দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আশ্বাস আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের

প্রকাশিত : ২৩ জুন, ২০২১, ০২:০৫ রাত
আপডেট : ২৩ জুন, ২০২১, ০২:০৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মহামারিতে তরুণ-তরুণীদের বেড়েছে বেকারত্ব, কমেছে আয়

নিউজ ডেস্ক: চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) দেশের তরুণ-তরুণীদের ওপরে একটি জরিপ পরিচালনা করে। সেই জরিপে দেখা গেছে, মহামারির আগে চাকরিতে নিযুক্ত থাকলেও এ তরুণ-তরুণীদের ১৫ শতাংশ মহামারির পর কর্মহীন হয়েছে। বাংলানিউজ

তাদের শিক্ষার নিম্নমান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার অভাব থাকার পাশাপাশি কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় শ্রম বাজারে ইতোমধ্যেই তারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। মহামারিকালীন তরুণদের জন্য প্রতিযোগিতা আরও কঠিন হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুন) বিআইজিডির গবেষকরা এক ওয়েবিনারে তাদের এ সংক্রান্ত গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেন।

কৃষিকাজ, দিনমজুর কিংবা পরিবহন শ্রমিকদের মতো তুলনামূলক কম দক্ষ কর্মীদের চেয়ে দক্ষতা নির্ভর পেশা যেমন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাখাত, হস্তশিল্প ইত্যাদিতে জড়িত তরুণ পেশাজীবীরা বেশি সময় ধরে বেকার থাকছেন। যারা আবারও চাকরি যোগাড় করতে পেরেছেন, তাদের গড় আয় কোভিড-পূর্ব অবস্থার তুলনায় ১১ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। শহরাঞ্চলের তরুণদের আয়ে বেশ বড়রকমের ধাক্কা লেগেছে, ১৫ শতাংশ আয় কমেছে তাদের। সে তুলনায় গ্রামাঞ্চলের তরুণদের আয় কমেছে ৯ শতাংশ পর্যন্ত।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম খান অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা ভাগ্যবান কারণ আমাদের দেশে বর্তমানে তরুণদের সংখ্যা বেশি। আমাদের এটির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে।

নারীদের অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক। মহামারির আগে চাকরিরত তরুণীদের এক তৃতীয়াংশ ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তাদের চাকরি হারিয়েছেন। চাকরি হারানোর এ হার তরুণদের চেয়ে তিন গুণ বেশি। অন্যদিকে মহামারির আগে ও পরে উভয় সময়ে চাকরিতে যোগদান করা নারীদের আয় কমে যাওয়ার হার পুরুষদের তুলনায় দ্বিগুণ। অর্থাৎ তরুণদের আয় ১০ শতাংশ কমলেও তরুণীদের ক্ষেত্রে তা কমেছে ২১ শতাংশ।

জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড ইকোনমিক্সের সহকারী অধ্যাপক ড. জেনিফার সিয়েগার জানান, আর্থিক সংকট তরুণ-তরুণীদের মধ্যে চাকরি ও শিক্ষার আগ্রহকে হ্রাস করছে।

এ গবেষণায় অংশ নেওয়া তরুণীরা মহামারির সময়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু খাত যেমন গৃহশিক্ষকতা, হস্তশিল্প, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অথবা, এনজিওতে কর্মরত ছিলেন। ফলে চাকরির ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা বেশ উদ্বিগ্ন।

এমনিতেই উচ্চশিক্ষা, শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ, কাজের সুযোগ ও আয় এসব দিক থেকে বাংলাদেশের নারীরা পুরুষদের চেয়ে পিছিয়ে আছেন। তার ওপরে করোনা ভাইরাসের ধাক্কা এ অবস্থার আরও অবনতি ঘটাতে পারে। উপযুক্ত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে নারী ক্ষমতায়নের যে ধারা বিদ্যমান ছিল, তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে।

করোনা মহামারি সবার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলেছে। তরুণ-তরুণীরা জীবন ও জীবিকা সংক্রান্ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকায় তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। জরিপে দেখা গেছে, ‘লকডাউন’র সময় থেকে তরুণ-তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও জরিপ অনুযায়ী প্রথম ‘লকডাউন’র সময়ে ঘিরে থাকা বিষণ্ণতা ও উদ্বিগ্নতা ১২ শতাংশ তরুণ এবং এক-পঞ্চমাংশ তরুণীদের মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতেও বিরাজমান।

বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন বলেন, মহামারির কারণে নারী-পুরুষের মধ্যে সৃষ্ট অসমতা যত দিন যাচ্ছে তত স্পষ্ট হচ্ছে এবং এ কথা তরুণ-তরুণীদের ক্ষেত্রেও একই। যা খুবই চিন্তার ব্যাপার।

এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় তার প্রভাব পড়েছে তরুণ-তরুণীদের ওপরে। স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা হয়েছিল শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনেকেই নানা প্রশিক্ষণ নেবেন, বিশেষ করে অনলাইনে। জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৫ শতাংশ তরুণ-তরুণী মহামারিকালীন নতুন প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে মহামারিতে মানবসম্পদ তৈরির জায়গায় শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ও শিক্ষার বিকল্প উপায় না থাকার ফলাফল দীর্ঘ মেয়াদে দেশের অর্থনীতিতে এবং তারুণ্যের আর্থিক স্বচ্ছলতায় প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশে ইউএনএফপিএ’র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার অ্যাডোলেসেন্ট অ্যান্ড ইয়ুথ ইউনিট ও ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অ্যানালিস্ট ড. মুহম্মদ মুনির হোসাইন বলেন, ইউএনএফপিএ’র কর্মসূচি থেকে দেখা গেছে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে দক্ষতা বাড়ানো সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সে চাহিদা মেটাতে সুযোগ ও সক্ষমতা তৈরি করা প্রয়োজন।

তার সঙ্গে একমত প্রকাশ করে ব্র্যাকের স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের হেড অব অপারেশনস জয়দীপ সিনহা রায় বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে দক্ষতা বাড়ানো বেশি চ্যালেঞ্জিং।

বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন ওয়েবিনার সঞ্চালনা ও পরিচালনা করেন। অনলাইনে এ সময় বিশিষ্ট গবেষক, উন্নয়নকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়