সুজন কৈরী : [২] অস্তিত্বহীন ও ভুয়া দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে পণ্য আমদানির আড়ালে এক হাজার ১৩ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে দায়ের হওয়া ১৬টি মানিলন্ডারিং মামলার প্রধান আসামি আব্দুল মোতালেবকে গ্রেপ্তার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
[৩] রোববার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরেরর কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল চট্টগ্রাম বন্দরে ১২টি কন্টেইনারে পোল্ট্রি ফিডের আর ক্যাপিটাল মেশিনারি ঘোষণায় অবৈধ মদ, সিগারেট ও টেলিভিশন খালাস করা হবে। পরে কন্টেইনারগুলো শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আটক করেন। ২০১৭ সালের ৫ ও ৬ মার্চ বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে কন্টেইনারগুলো ইনভেন্ট্রি করা হয়। কন্টেইনারে মেশিনারিজের পরিবর্তে বিপুল পরিমাণ সিগারেট, এলইডি টেলিভিশন, ফটোকপিয়ার মেশিন ও অবৈধ মদ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় হেনান আনহুই এগ্রো এলসি ও এগ্রো বিডি অ্যান্ড জেপি নামক দুটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১৪০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং আইনে পল্টন থানায় একই বছরের ২৭ নভেম্বর মামলা করা হয়।
[৪] অনুসন্ধানে দেখা যায়, দুটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের আগে ৭৮টি কন্টেইনারে মেশিনারিজ ঘোষণায় বিপুল পরিমাণ সিগারেট, এলইডি টিভি, ফটোকপিয়ার মেশিন ও মদ খালাস নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে বিদেশে ৮৭৩ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। পরে পল্টন থানায় মানিলন্ডারিং আইনে পৃথক ১৫টি মামলা করা হয়। দুটি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী আব্দুল মোতালেব হওয়ায় তাকে এক নম্বর আসামি করে পল্টন থানায় ১৬টি মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা। মামলার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
[৫] মহাপরিচালক আরও জানান, মোতালেবের বিরুদ্ধে মোট এক হাজার ১৩ কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফলে তার বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা করা হয়েছে। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে তিনি মেশিনারিজ ঘোষণায় অবৈধ মদ, সিগারেট, টেলিভিশন ও ফটোকপিয়ার মেশিন আমদানি করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গ্রেপ্তার হওয়ায় মোতালেবের কাছ থেকে অর্থপাচারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। একইভাবে অর্থপাচারের আরও ১৪টি মামলার বিষয়ে মোতালেবের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করেন তিনি।
[৬] ড. মো. আব্দুর রউফ বলেন, এর আগে হেব্রো ব্রাঞ্চো ও চায়না বিডিএল নামে অস্বিত্বহীন আরো দুটি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী সুরুজ মিয়া ওরফে বিল্লাল হোসেনকে গত ৮ জুন গ্রেপ্তার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা। এই দুটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে সুরুজ মিয়া মেশিনারিজ ঘোষণায় সিগারেট, মদ, এলইডি টেলিভিশন, ফটোকপিয়ার আমদানি করেছেন। যার মাধ্যমে সুরুজ মিয়া বিদেশে ৫২৫ কোটি টাকা পাচার করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। সুরুজ মিয়াকে প্রধান আসামি করে মানিলন্ডারিং আইনে ১৪টি মামলা করেছে শুল্ক গোয়েন্দা। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :