শিরোনাম
◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ১৭ জুন, ২০২১, ০৪:১২ দুপুর
আপডেট : ১৭ জুন, ২০২১, ০৪:১২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী : বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সর্বাত্মক চেষ্টায় আমরা এগিয়ে আছি, এটা স্বীকার করি না কেনো!

দীপক চৌধুরী: নানামুখী সমালোচনার পরেও গত এক যুগে জাতি হিসেবে আমরা অনেক এগিয়েছি, এটা স্বীকার করতেই হবে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার তো আছেই। প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, রেমিট্যান্স বেড়েছে, রিজার্ভ বেড়েছে, গড় আয়ু বেড়েছে, জীবনমান উন্নত হয়েছে- এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে বলেই সমালোচনাও আছে। কিছুদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী দশ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন সাংবাদিকদের। কিন্তু সেখান থেকে যে সরকারের কট্টর সমালোচনাকারীরাও অনুদান পাবেন না এমনটি নয়। এ কথাটিই পরিষ্কার করে দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

যদিও আমাদের একটি প্র্যাকটিস রয়েছে যে, টকশো বা নানা সভা-সেমনিারে সত্যকে ছাইচাপা দিয়ে আমরা মুখস্থ’ কথা বলে সস্তা করতালি পেতে চাই। কিন্তু এতে কী কোনো লাভ হচ্ছে। সঠিক সমালোচনা হলে সরকারও কাজে লাগাতে পারে। আগে দেশ বড়, রাজনীতি নয়। কন্তু আমরা কৃতজ্ঞতা দেখতে পাই না। জাতীয় সংসদে সংসদনেতা ও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকার দেশের গণমাধ্যমকে সব ধরনের সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সমাজে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা আরো জানান, বর্তমানে দেশে প্রকাশিত পত্রিকার সংখ্যা তিন হাজার ২২২টি। এছাড়া সরকার বেসরকারি খাতে ৪৫টি টেলিভিশন, ২৭টি এফএম রেডিও এবং ৩১টি কমিউনিটি রেডিও চ্যানেলের অনুমতি দিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের ফলে গণমাধ্যম অঙ্গন শক্তিশালী হয়েছে। দেশে টিভি চ্যানেলগুলো এখন অনেক কম খরচে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার করে সম্প্রচার কার্যক্রম চালাচ্ছে।

অবশ্য, কোনোদিনই এই সত্য টিভিওয়ালাদের (দুয়েকজন ছাড়া) মুখ থেকে শুনলাম না যে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার করে আমরা উপকৃত হচ্ছি। সম্ভবত এটাই আমাদের সংস্কৃতি। আমরা অনেকেই ভীষণভাবে আকৃষ্ট হই, কৃতজ্ঞতাকে লুকিয়ে রাখতে। পাট রপ্তানী করে শত শতকোটি ডলার আয় করছি এটা প্রচার করি না, প্রচার করি পাটচাষীর ক্ষোভ। ধর্মব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্র প্রচার করি না বরং প্রকাশ করি ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট। ত্ব-হাকে নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটাচ্ছে কেই কেউ। কিন্তু ত্ব-হা নামের অপপ্রচারকারী ব্যক্তিটি ওয়াজের নামে কী কী প্রচার করছে তা সংগ্রহ করে সঠিক তদন্ত করার কথা বলি না। কেনো? অবশ্যই ত্ব-হা উদ্ধার করে বিচারের মুখোমুখি করা চাই তাকে। গুম আতঙ্ক নয়, সত্য প্রকাশ হোক।

যাকগে, পরিষ্কার অনুমান করা যায় একদণ্ডও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চিত বসে থাকার মানুষ নন। তাঁর মতো পরিশ্রমী ও দূরদর্শী নেত্রী সম্ভবত দ্বিতীয় কেউ নেই। করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন নিয়েও আশাবাদের কথা বলেছেন তিনি। করোনা বিশে^র জন্যই মারাত্মক ধাক্কা। করোনার প্রবল ধাক্কা আমাদের আক্রান্ত করেছে। করোনাসহ বিভিন্ন ভাইরাসের প্রতিরোধক ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ একটি আন্তর্জাতিক মানের ভ্যাকসিন ইনষ্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার চিন্তা শেখ হাসিনার। আসলে স্বপ্ন থাকতে হয়। পরিকল্পনা থাকতে হয় এগিয়ের যাওয়ার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের নয়, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কথা ভাবেন। আমাদের আরেক নেত্রী শুধু ‘না’ ‘না’ শব্দ দিয়েই রাজনীতি করেছেন জীবনভর। একটিবারও দেশ গড়বার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য মানুষের সামনে দাঁড়াতে দেখলাম না। এখন অবশ্য, সেই ‘না’ শব্দটি বলবার ক্ষমতাও কম তাঁর। কারণ, তিনি নিজেই বিতর্কিত।

সম্প্রতি চমৎকার কথা বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ‘একজন মানুষ ক’বার জন্মায়’ মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছে এ প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আপনারা বেগম খালেদা জিয়াকে এভাবে পাঁচ-ছ’টি জন্মের তারিখ দিয়ে কেন বারবার জন্মগ্রহণ করালেন!’ সুরসিক, সুদক্ষ মন্ত্রী ও অত্যন্ত মেধাবী রাজনীতিবিদ ড. হাছান মাহমুদ মানুষের মনের কোণে জাগ্রত থাকা এ প্রশ্নটিই করেছেন। আসলেই তো একজনের কয়টি জন্মদিন হতে পারে? ‘বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনের বিভিন্ন তারিখ ব্যবহার বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না’ - রোববার হাইকোর্টে এই মর্মে রুল জারি হয়। এরপর মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের বিষয়ে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এ প্রশ্নটি রাখেন।

আমরা জানি, চলতি অর্থ বছরে দেশের রফতানির লক্ষ্য ৪৮ বিলিয়নের মধ্যে ইতোমধ্যে ৯৫ ভাগ অর্জন হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে আমাদের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, রেমিট্যান্স বেড়েছে, রিজার্ভ বেড়েছে, গড় আয়ু বেড়েছে, জীবনমান উন্নত হয়েছে। বিপরীতে দারিদ্র্য হার, মা ও শিশু মৃত্যু হার, আয় বৈষম্য ও নিরক্ষরতার হার হ্রাস পেয়েছে। তাছাড়া এ মহামারির মধ্যেও শেখ হাসিনা আর্থ-সামাজিক সব খাতকে সচল রাখতে সম্ভব সবরকম পদক্ষেপ নিয়েছেন। এবারের বাজেট নিয়েও এককথায় মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনা করেছেন একশ্রেণির রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, অর্থনৈতিক গবেষক। আর এতে তাদের উদ্দেশ্যই ছিল রাজনীতি। দেশের মানুষ নয়, দেশের বিশেষ গোষ্ঠীদের পক্ষে কথা রাখা।

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা মেরামত করে পুনরায় প্রাণসঞ্চার করে কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে বলে বাজেট পর্যালোচনায় মনে হচ্ছে। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সফলভাবে করোনা মোকাবেলা করা সম্ভব হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছে। বিশেষ করে করোনাকালে আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা ও সাধারণ জীবন সচল রাখতে যে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে তা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। দেশে অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকা নিয়েছেন এক কোটি ৮১ হাজার ৮শ জন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেছেন, ১৪ হাজার কোটি টাকা টিকার জন্য রয়েছে। সরকারের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে করোনার বাকী টীকার জন্য।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষি কাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে কৃষিকে আধুনিক ও লাভজনক করতে চেষ্টা করছে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। এটা আমরা বিশ^াস করি। কৃষি যান্ত্রিকীকরণে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার প্রকল্প। এ বছরে বোরোতে ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার বেশি ব্যবহৃত হওয়ায় দ্রুততার সঙ্গে ধান ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছে।

সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকও জানিয়েছেন, ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে অঞ্চলভেদে ৫০%- ৭০% ভর্তুকিতে কৃষকদেরকে কৃষিযন্ত্র দেওয়া হচ্ছে। এটি বিশ্বের একটি বিরল ঘটনা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষিতে নতুন অধ্যায় সূচিত হলো। মন্ত্রী মনে করেন, এর মাধ্যমে ফসল উৎপাদনে সময় ও শ্রম খরচ কমবে। কৃষক লাভবান হবে। বাংলাদেশের কৃষিও শিল্পোন্নত দেশের কৃষির মতো উন্নত ও আধুনিক হবে বলে বিশ^াস করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়