রাশিদ রিয়াজ : ২০১৪ সালে পাকিস্তানের পেশওয়ারে স্কুলের ক্লাসে পাঠে মগ্ন ছিলেন যে ১৪ বছরের কিশোর আহামাদ নওয়াজ সে এখন অক্সফোর্ড ইউনিয়নের ট্রেজারার নির্বাচিত হয়েছেন। সেদিন তালেবান সন্ত্রাসীরা আর্মি পাবিলিক স্কুলে অস্ত্র নিয়ে আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছাত্রদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে। নওয়াজের ছোটভাই সহ ১৪১ জন ছাত্র মারা যায় তালেবানদের গুলিতে। যাদের মধ্যে ১৩২ জন শিশু। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান আহমাদ নওয়াজ। আজ সেই নওয়াজ ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ^বিদ্যালয়ে প্রখ্যাত বিতর্ক সমিতির ট্রেজারার নির্বাচিত হয়েছেন। নওয়াজের ছোট ভাই হারিস গুলিতে মারাত্মক আহত হয়ে মারা যান। নওয়াজের বাহুতে গুলিবিদ্ধ হবার পর সে নিহত ছাত্রদের মধ্যে মরার মত ভান করে পড়েছিলেন। তাকে মৃতভেবে তালেবানরা চলে যায়। দি প্রিন্ট
এখন নওয়াজের বয়স ২০ বছর। ঠিক মালালার মত একই দেশে শিক্ষার জন্যে অন্যদের কাছে অনুকরণীয় এক কর্মী হিসেবে আবির্ভুত হয়েছেন। ২০১২ সালে মালালা ইউসুফজাই ১৫ বছর বয়সে স্কুলে যাওয়ার কারণে তালেবানদের গুলির শিকার হন। অক্সফোর্ড ভার্সিটিতে গত বছর তিনি মেধাবী তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। শনিবার টুইট করে তিনি অক্সফোর্ড ইউনিয়নের ট্রেজারার নির্বাচিত হওয়ার কথা জানান। নওয়াজ পড়ছেন দর্শন, লেডি মার্গারেট হলের তত্ত্ব সহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর। মালালার মতই নওয়াজের পরিবার পাকিস্তান থেকে ব্রিটেনে পাড়ি জমান। নওয়াজের চিকিৎসা ও পুনরায় নতুন জীবন শুরু করতে।
টুইটারে নিজেকে নওয়াজ ‘বেঁচে থাকা’ এবং মানবাধিকারকর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে বলেছেন তিনি যুবকদের ক্ষমতায়ন, টেকসই এবং বঞ্চিত শিশুদের জন্য শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছেন। গত বছর গালফ নিউজ নওয়াজকে নিয়ে এক প্রতিবেদনে জানায় কিশোর কর্মী হিসেবে নওয়াজ ব্রিটেনে নতুন জীবন শুরু করেছেন। পর্তুগালে বিশ^নেতাদের এক সম্মেলনে নওয়াজের যোগ দেওয়ার সুযোগ হয়েছে। যোগ দিয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্তদের সম্মেলনে ও তরুণদের বিভিন্ন অধিকার আদায় ও নিশ্চিত করার আয়োজনে। নওয়াজ তার দেশের খাইবার পাখতুনখাওয়ার অনেক তরুণকে বৃত্তির সুযোগ করে দিয়েছেন এবং লেবাননে শরণার্থী শিশুদের জন্যে একটি স্কুল নির্মাণ করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :