আমিনুল ইসলাম : সাকিব, তুমি হয়তো আমার পোস্টটি পড়বে। এটি কোনে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে লেখা না। লেখাটা একজন সাকিব, যে কিনা খেলোয়াড় হিসেবেই শুধু বিশ্বসেরা নয়; পুরো বাংলাদেশেই সুপারস্টার। প্রথম ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সাকিব বল করার পর লেগ-বিফোরের আবেদন করেছে। কিন্তু আম্পায়ার আউট না দেয়ায় সাকিব রাগে পা দিয়ে উইকেট ভেঙে দিয়েছে। দ্বিতীয় ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বৃষ্টি পুরোপুরি শুরু না হবার পরও ৬ ওভার বাকি হতে মাত্র এক বল থাকার সময় আম্পায়ার খেলা বন্ধ করে দিয়েছে। এই জন্য সাকিব দৌড়ে এসে আবার হাত দিয়ে সবগুলো উইকেট ভেঙে দিয়েছে!
আজ আবাহনী ও মোহামেডানের খেলা ছিলো। সাকিব খেলছে মোহামেডানের হয়ে। আমরা যারা নিয়মিত ঢাকা লীগ ফলো করে আসছি, অনেকেরই জানা আছে আজকাল আবাহনী নানান ভাবে সুবিধা পায়। সাকিবের হয়তো মনে হয়েছে আম্পায়ার আবাহনীকে সুবিধা দিচ্ছিল। আমার নিজেরও তেমনটাই মনে হয়েছে।
কিন্তু তাই বলে এই আচরণ কোনো অবস্থাতেই মেনে নেয়া যায় না। অন্য অনেক ভাবে প্রতিবাদ করা যেতো।
আমি স্রেফ আমার উদাহরণ দেই। আমি শিক্ষকতা করি। সেই সঙ্গে লেখালেখি করি। আমার হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী যেমন আছে, লক্ষাধিক পাঠকও আছে। আমি চাইলেই প্রকাশ্যে যা ইচ্ছে তাই বলে বেড়াতে পারি না।
কারণ আমি জানি এতে করে আমাকে যারা অনুসরণ করে; তারা হয়তো আমার এই খারাপ দিকটি নিয়ে নিতে পারে। আর আমি তো অতি ক্ষুদ্র মানুষ।
সাকিব, তোমার তো কোটি কোটি ভক্ত। তুমি মাঠে খেলা চলা অবস্থায় যে আচরণ করেছো, সেটা যদি তোমাকে যারা আদর্শ মানে, তারা করে বেড়ায়, তুমি নিজে কী সেই আচরণকে ভালো বলবে?
কোটি কোটি ভক্ত তাহলে তোমার কাছ থেকে কি শিখবে? ফুটবল-ক্রিকেট কিংবা অন্য যে কোনো খেলার সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়রা সমাজে মানুষ হবার বার্তা দিয়ে বেড়াচ্ছে। তুমি কী নিজেকে মহামানবের পর্যায়ে ভাবতে শুরু করেছো? মাঠে হয়তো তোমার দলের বিরুদ্ধে অন্যায় হয়েছে। আমারও সেটাই মনে হয়েছে । তুমি খেলা শেষে নানান ভাবে তার প্রতিবাদ করতে পারতে। দরকার হয় পত্রিকায় এই নিয়ে আস্ত একটা লেখাও লিখতে পারতে।
কিন্তু তাই বলে এমন আচরণ? সময় থাকতে পা মাটিতে নামাও। মনে রেখো- ৩০ তলা বিল্ডিংয়ে এমনকি লিফট দিয়ে উঠতেও তিন-চার মিনিট লেগে যায়। কিন্তু ৩০ তলা থেকে একবার পা পিছলে পড়ে গেলে, নিচে পড়তে সময় লাগে মাত্র কয়েক সেকেন্ড।
ফেসবুক থেকে তানিমা শিউলি