ফজলুল বারী : বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর রেডিও-টিভির প্রচারণার অন্যতম দিক ছিলো, বঙ্গবন্ধু ছিলেন ইসলাম বিদ্বেষী। তাকে সরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ইসলামকে নিরাপদ করা হয়েছে। এরপর থেকে বাংলাদেশে যতো নির্বাচন হয়েছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রচারণার অন্যতম সুর ছিলো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে মসজিদে আবার উলুধ্বনি হবে। শাঁখা সিঁদুর পরতে হবে সবাইকে। এমনকি খালেদা জিয়াও এই বক্তৃতা দিতেন।
একইভাবে আওয়ামী লীগকে প্রতিটি নির্বাচনে বলতে হতো- আওয়ামী খাঁটি মুসলমানদের দল। সেই থেকে আওয়ামী লীগের এতো নেতা যে গোলটুপি পরতে শুরু করেন আর কোনো দলের নেতাদের মাথায় এতো গোলটুপি নেই। আওয়ামী লীগকে এখন পর্যন্ত মুসলমানিত্বের পরীক্ষা দিয়ে যেতে হচ্ছে। এই যে দেশজুড়ে এতো মসজিদ বানানো হচ্ছে, ...যতো মসজিদের উদ্বোধন হবে, এর সবই সেই পরীক্ষার অংশ। কিন্তু প্রশ্ন এতে কি আওয়ামী লীগের কোনো লাভ হচ্ছে? সঠিক উত্তর ফলাফল শূন্য। কারণ বাংলাদেশের কোনো নির্বাচন বা আন্দোলন সংগ্রামের কোনো প্রমাণ নেই।
দেশের মোল্লা-মৌলভীরা বংশ পরষ্পরায় বাংলাদেশবিরোধী এবং পাকিস্তানপন্থী। তাই তারা ভারতবিরোধীও। আওয়ামী লীগের কথা মনে মনে ভাবতেই তাদের মনে নরেন্দ্র মোদীর চেহারা ভাসে। সুদভিত্তিক মুক্তবাজার অর্থনীতির পৃথিবীতে ইসলামী আন্দোলনের ভবিষ্যত শূন্য। এটা ব্যক্তিগত ব্যবসা রুটিরুজির জীবিকা হতে পারে মাত্র। তাই বাংলাদেশজুড়ে আওয়ামী লীগ যতো মসজিদ বানাক না কেন, মোল্লাদের ভোট আওয়ামী লীগ পাবে না। বাংলাদেশের মানুষও মসজিদ মার্কা দেখে ভোট দেয় না। নৌকা বা ধানের শীষ দেখে ভোট দেয়।
তাহলে আওয়ামী লীগকে কী করতে হবে? চলতি ডান্ডাতন্ত্র। ডান্ডার কারণে গত রোজায় মোল্লাদের সদকা যাকাতের আয় কমেছে। কোরবানির ঈদ পর্যন্ত এটা বহাল রাখতে হবে। মোট কথা কাজ করে খেতে হবে সবাইকে। মোল্লাদের শ্রমিক হিসেবে বেশি বেশি সৌদি আরবে পাঠান। আরবি জানার কারণে তারা কাজ ভালো পাবেন। কিন্তু কাজ করে খেতে হবে। যখন মরুভূমির তপ্ত পরিবেশে বসে বুঝতে পারবেন দেশে ভুলপথে ছিলেন। এই পৃথিবীতে কাজ করে আয় করে বিবি বাচ্চাসহ খাওয়াপরা ছাড়া কোথাও কোনো সঠিক পথ নেই।
লেখক : অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে